কোরিয়ান ডিমিলিটারাইজড জোন সম্পর্কে তথ্য
ডিমিলিটারাইজড জোন! কোরিয়ান উপদ্বীপে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক সীমানা।
হ্যালো বন্ধুরা! আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা জানবো কোরিয়ান ডিমিলিটারাইজড জোন সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জানবো। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক আন্তর্জাতিক সীমান্ত হিসাবে পরিচিত।
কোরিয়ান ডিমিলিটারাইজড জোন হল উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে একটি বাফার জোন। এই জোনটি প্রায় 250 কিলোমিটার দীর্ঘ এবং 4 কিলোমিটার চওড়া। কোরিয়ান যুদ্ধের সমাপ্তির পর এই জোন টি তৈরি করা হয়েছিল। এই এলাকাটি উভয় পক্ষের সৈন্য,কাঁটাতার এবং সক্রিয় ল্যান্ডমাইন দ্বারা সম্পূর্ণ। কোরিয়ান যুদ্ধের (1950-1953) সমাপ্তির পর দুই দেশের মধ্যে চিরতরে শত্রুতা শেষ করতে কিছুই করা হয় নি। এই দুই দেশ শান্তির জন্য আজ পর্যন্ত কোনো চুক্তি করে নি। তারা 60 বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ করছে এবং তারা কখনো একে অপরের সার্বভৌম মর্যাদাকে স্বীকৃতি দেয় না। এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে আমেরিকান নাগরিক সহ শত শত মানুষ মারা গিয়েছে। সেখানে উত্তেজনা এতটাই তৈরি হয় যে তাদের নিজ নিজ সামরিক বাহিনীকে একে অপরের থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখার জন্য এই ডিমিলিটারাইজড জোনকে একটি বাফার জোন হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল। যে এই লাইন অতিক্রম করার চেষ্টা করবে তাকে গুলি করা হবে।
কেউ কেউ ডিমিলিটারাইজড জোন কে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানগুলির মধ্যে একটি বলে। এটা সত্য যে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ডি ফ্যাক্টো সীমানা হিসাবে এই জোন কাজ করে। এই জোনের ভিতর সবকিছু একেবারেই শান্ত। সেইজন্য জোনটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান হয়ে উঠেছে। ডিমিলিটারাইজড জোনে পর্যটকরা যে সাইটগুলি দেখতে আসে তার মধ্যে রয়েছে জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়া। যা 800 মিটার চওড়া এবং 400 মিটার লম্বা৷ এটি একটি যৌথ নিরাপত্তা এলাকা যা দুই দেশের মধ্যে একটি বৈঠকের স্থান হিসেবে সংরক্ষিত ছিল।
এছাড়াও এই জোনে রয়েছে একটি ফ্রিডম হাউস, যা বাফার জোনের দক্ষিণ কোরিয়ার পাশে অবস্থিত। ফ্রিডম হাউস হল একটি মিউজিয়াম যেখানে পর্যটকরা কোরিয়ান যুদ্ধ, চলমান সংঘাত এবং ডিমিলিটারাইজড জোন সম্পর্কে জানতে পারে। এছাড়াও সেখানে চারটি টানেলও রয়েছে। এই সুড়ঙ্গগুলি উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর জন্য খনন করেছিল। এছাড়াও সেখানে একটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে। যা দুই কোরিয়ার মধ্যে রেল সংযোগ হিসেবে কাজ করে। ডিমিলিটারাইজড জোনের অন্যান্য আকর্ষণগুলির মধ্যে হল এলাকার দৃশ্য এবং বন্যপ্রাণী। এই বাফার জোনে 6,000 টিরও বেশি উদ্ভিদ এবং প্রাণী প্রজাতি রয়েছে।
যদিও কোরিয়ান ডিমিলিটারাইজড একটি বিপজ্জনক স্থান। কিন্তু এর ফলে সেখানে কিছু ইতিবাচক উন্নয়ন হয়েছে। 2019 সালে এই জোনে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক মুখোমুখি বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল ।
তো এই ছিল কোরিয়ান ডিমিলিটারাইজড জোন সম্পর্কে কিছু তথ্য।।
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন