Bengali Gossip 24

Knowledge is Power 😎

স্ট্যাচু অফ ইউনিটি (Statue Of Unity) সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন | Bengali Gossip 24

কোন মন্তব্য নেই
স্ট্যাচু অফ ইউনিটি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য (Unknown Facts about Statue Of Unity)

স্ট্যাচু অফ ইউনিটি (Statue Of Unity) সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন | Bengali Gossip 24

স্বাধীনতার আগে ভারতবর্ষের 562 রাজ্যকে একত্রিত করে রিপাবলিক অফ ইন্ডিয়া তৈরি করেছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের কথা আমরা সকলেই জানি। তাই আজ আমরা তার সম্পর্কে নয়, জেনে নেব তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি করা বিশ্বের উচ্চতম ঐক্যের প্রতীক রূপে স্তম্ভ অর্থাৎ স্ট্যাচু অফ ইউনিটের বিষয়ে। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের 143 তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করতেই এই সুবিশাল মূর্তি টি উদ্বোধন করেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তো চলুন জেনে নিই স্ট্যাচু অফ ইউনিটি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।

গুজরাটে নর্মদা নদীর উপর তৈরি সাধুবেট নামক দ্বীপের উপর এই সুবিশাল মূর্তি স্ট্যাচু অফ ইউনিটি নির্মাণ করা হয়েছে।

স্ট্যাচু অফ ইউনিটির উচ্চতা প্রায় 182 মিটার বা 600 ফুট। চীনের স্প্রিং টেম্পল বুদ্ধা মূর্টি চেয়েও 23 মিটার উঁচু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত স্ট্যাচু অফ লিবার্টির থেকেও উঁচু এই স্ট্যাচু অফ ইউনিটি। এই মূর্তি টি প্রায় 20000 বর্গ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।

এই মূর্তি টির নির্মাণের ঘোষণা করা হয় 2010 সালে, যখন নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তারপর মূর্তি টির নির্মাণের কাজ শুরু হয় 2013 সালে অক্টোবর মাসে এবং মূর্তি নির্মাণের কাজ শেষ হয় 2018 সালে।

2018 সালে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের 143 তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশ্বের সব থেকে উঁচু মূর্তি র উদ্বোধন করেন। সর্দারের এই মূর্তি র পাশে পর্যটকদের জন্য শ্রেষ্ঠ ভারত ভ্রমণ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে 50 টির বেশি ঘর রয়েছে। সেখানে তৈরি করা হয়েছে উন্নত যোগাযোগের ব্যবস্থা এবং উন্নত মানের খাবারের ব্যবস্থা।

2014 সালে নরেন্দ্র মোদী ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেই বছর ই তিনি l&t কোম্পানি কে এই মূর্তি নির্মাণের দায়িত্ব দেন। এই মূর্তি টি তৈরিতে খরচ হয়েছে 2989 কোটি টাকা অর্থাৎ তিন হাজার কোটি টাকার মতো।

যেহেতু সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে ভারতের লৌহ পুরুষ বলা হয় তাই তার এই মূর্তি তৈরির জন্য সরকার ভারতবর্ষের প্রতিটি জায়গা থেকে লোহা, মাটি এবং জল সংগ্রহ করে। এই লোহা ই হলো সরদারের বিশাল আকার মূর্তিটির মূলভিত্তি। এছাড়াও মূর্তি তৈরীর জন্য 70 হাজার মেট্রিকটন সিমেন্ট, 18500 মেট্রিকটন স্টিলের ব্যবহার করা হয় এবং মূর্তিটির বাইরের আবরণ তৈরি করতে 1800 মেট্রিকটন ব্রোঞ্জের ব্যবহার করা হয়।

প্রায় তিন হাজার কর্মী সাড়ে তিন বছর ধরে মূর্তি নির্মাণ করেছেন। যার মধ্যে l&t এর 300 ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন এবং 200 জন চিনা শ্রমিকসহ প্রায় 4000 জন শ্রমিক কাজ করে।

এই সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের মূর্তি তে ধুতি, কোর্তা এবং চাদর পড়ে থাকা সেই পরিচিত রূপ ফুটে ওঠে।
এই মূর্তি টি এতটাই উঁচু যে সর্দার প্যাটেলের মাথাটাই প্রায় 6/7 টি ফ্লোরের সমান এবং কোটের বোতাম গুলির দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই মিটার। এই মূর্তি র সবথেকে ইন্টারেস্টিং জিনিস হলো মূর্তির পাদদেশে থেকে প্রায় 50 জনেরও বেশি মানুষ নিয়ে যাওয়ার মতো দুটি হাইস্পিড লিফটের ব্যবস্থা রয়েছে, যার গতি বেগ প্রায় চার মিটার পার সেকেন্ড অর্থাৎ মাত্র 40 সেকেন্ডে লিফট 150 মিটার উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। এই 150 মিটার উচ্চতায় সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের বুকের বা দিকে একটি খোলা গ্যালারি রয়েছে। সেখান থেকে একসাথে 200 জন মানুষ ভ্যালি, ব্রিজ এবং পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবে।

এছাড়াও এই মূর্তি টির ভিতরে একটি অনন্য মিউজিয়াম এবং রিসার্চ সেন্টার রয়েছে। সেখানে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের বই সহ নানান জিনিসপত্র রাখা থাকবে। তার সাথে রয়েছে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জীবনী দেখার এক অনন্য ব্যবস্থা। এই মূর্তি র বাইরে দিকে লাগানো রয়েছে আধুনিক আলোকসজ্জা এবং মূর্তি টির 5 কিলোমিটার জায়গা জুড়ে রয়েছে সিসি টিভি ক্যামেরা।

রিখটার স্কেলে প্রায় 6.5 পর্যন্ত ভূমিকম্প রোধ করতে পারে এই মূর্তি। এবং বিভিন্ন রকমের দূষণ এড়াতে বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রতিবছর নানান দেশ থেকে পর্যটক আসে এই মূর্তির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। তো আপনি যদি এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে আপনিও যেতে পারেন।

তো এই ছিলো ভারতের আয়রন ম্যান বা লৌহমানব এর সুবিশাল মূর্তি স্ট্যাচু অফ ইউনিটি সম্পর্কে কিছু তথ্য।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ইতালি (Italy) সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন | Bengali Gossip 24

1 টি মন্তব্য
ইতালি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য (Unknown Facts about Italy in Bengali)

ইতালি (Italy) সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন | Bengali Gossip 24


ইতালি! ইতালি কে বলা হয়ে থাকে স্বপ্নের দেশ। পৃথিবীর মানবসভ্যতার ইতিহাসে ইতালি তার পরিচয় দিয়েছে শুধু রোমান সাম্রাজ্যের জন্য নয়, প্রাচীনকালে তার শিল্প ও বিজ্ঞান চর্চার প্রভাব আজও পৃথিবীতে রয়েছে এবং যতদিন মানুষ থাকবে তাকে অস্বীকার করা সম্ভব হবে না। যে দেশে বিখ্যাত শিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এবং মাইকেলেঞ্জেলো জন্মেছেন তার প্রমাণ মোনালিসার ছবি এখনো দিয়ে যাচ্ছে। যা লিওনার্দো দা ভিঞ্চির তৈরী। আর দূরের গ্রহ-নক্ষত্রকে কাছে থেকে দেখার জন্য যে যন্ত্র টি ব্যবহার হয়ে থাকে এবং তার পিছনে যে মানুষটার অবদান আমরা চিরকাল মনে রাখব সেই গ্যালিলিও গ্যালিলির জন্ম এই ইটালিতে। মহাকাশ বিজ্ঞানে ব্যবহৃত টেলিস্কোপ এর উন্নতির পিছনে তার যেটুকু অবদান রয়েছে তা আজও সাধারন মানুষ তথা বিজ্ঞানীদের কাছে অকল্পনীয়। ইটালির প্রতিটা কোণা তার ঐতিহ্য এবং শিল্প কারুকার্জ এর জন্য বিখ্যাত। তো চলুন স্বপ্নের দেশ ইতালি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিই ।

ইটালি শব্দ টি এসেছে ইতালিয়া থেকে। এর অর্থ হলো ল্যান্ড অফ কাবস্। সম্ভবত প্রাচীন দক্ষিণের ইতালিয় উপজাতিদের প্রতীক ছিল ষাঁড়। আসলে ইতালির বর্তমানের দক্ষিণ দিক টাকে ইটালিয়া নামে ডাকা হতো। যা পরে গ্রিক রা আরো বেশি জায়গাকে জুড়ে এই নামে ডাকতে শুরু করে।

ইতালির মোট আয়তন 3 লক্ষ 1 হাজার 340 বর্গকিলোমিটার এবং দেশের চারিদিকে রয়েছে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেিয়া, স্লোভানিয়া এবং ভূমধ্য সাগরের কিছু দ্বীপ রয়েছে। 

ইটালি জনসংখ্যার দিক দিয়ে বর্তমানে 23 তম এবং 2018 অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার 6 কোটি 4 লক্ষ 36 হাজার 469 জন। আর দেশের প্রতি বর্গকিলোমিটার জায়গায় 201 জন মানুষ বসবাস করে। 

ইটালিয়ান ভাষা এদেশের আধিকারিক ভাষা এবং দেশের নাগরিক দের ইতালিয়ান বলে। এই দেশের জনবহুল এথনিক গোষ্ঠীও ইতালিয়ান।

ইতালিতে খ্রিস্টান ধর্মের মানুষ বেশি থাকে। 2012 সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে প্রায় 83.3 শতাংশ খ্রিস্টান মানুষ বসবাস করে।

ইতালির জাতীয় মুদ্রা ইউরো । 1 ইউরো প্রায় 78 টাকার সমান। 

6 থেকে 16 বছর বয়সে ইতালিতে পড়াশোনা বিনামূল্যে করানো হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতা অবশ্যই দেশটার বেশি। কারণ যে দেশে ইউনিভার্সিটি অফ বলোগ্না রয়েছে, যাকে পৃথিবীর এক প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে ধরা হয়। আর দেশের শিক্ষিতের হার 99.2 শতাংশ।

PO নদী ইতালির দীর্ঘতম নদী। যার দৈর্ঘ্য 652 কিলোমিটার।  ইটালির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মন্ট ব্লাঙ্ক। আল্পস পর্বতমালার অন্তর্গত এর উচ্চতা 4808.7 মিটার। ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত সক্রিয় কিছু আগ্নেয়গিরির মধ্যে কয়েকটা ইতালিতে আছে। যাদের মধ্যে সবথেকে বিপদজ্জনক হিসেবে পরিচিত ভেসুভিয়াস। ভেসুভিয়াস বেশি সক্রিয় এবং বিপদজনক এই কারণে যে এর আগে সে নিজের ধ্বংসলীলা দেখিয়েছে। আর এই সক্রিয় আগ্নেয়গিরি আশপাশে রয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষের বসতি। দেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী তাইবার নদীর তীরে অবস্থিত প্রাচীন শহর রোম। রোম শহর ইতালি এবং তার এক প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও রাজধানী। রোমের ইতিহাস কয়েক শতাব্দীর। যেখানে প্রাচীন বাড়িঘর এবং ভাস্কর্য পৃথিবীর আশ্চর্য নির্মাণে মধ্যে গণ্য হয়। একসময় রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল রোম। 

তাই ঐতিহাসিকদের মতে রোম শহরকে পাশ্চাত্য সভ্যতার জন্মস্থান রূপে আখ্যা দেওয়া হয়। আবার পৃথিবীর আদিম কালে নিয়মিত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ শহর রোম।এই রোম শহরের মধ্যেই রয়েছে পৃথিবীর সব থেকে ছোট দেশ ভ্যাটিকান সিটি। রোমের অনেক গুলি নাম কয়েকজন বিশিষ্ট জনেরা দিয়েছেন যেমন কাপিটাল অফ দা ওয়ার্ল্ড, দ্য ইটার্নাল সিটি ইত্যাদি। ভ্যাটিকান সিটির উপস্থিত এবং রোমের পুরাতন কারুকার্য গুলি এখন পর্যটকদের জন্য সবসময় ব্যস্ত থাকে। এই সমস্ত কারণে গ্লোবাল সিটির জন্য উপযুক্ত স্ট্যাটাস রোম শহরকে দেওয়া হয়েছে। 

আরেকটা বিখ্যাত শহর ভেনিস এই ইতালিতেই অবস্থিত। প্রায় 120 টা ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই শহর। আর এই ছোট ছোট দ্বীপ গুলি কে যুক্ত করেছে 400 টির মতো ছোটো ছোটো ব্রিজ। দ্বীপ গুলির মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ক্যানেল গুলির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় বোঝা যায় এই শহরের সৌন্দর্যটা। তাই সিনেমাতে প্রায়ই এই শহরের ঝলক আমরা দেখতে পাই। ভেনিস নামের উৎপত্তি ভেনেটি নামের এক প্রাচীন মানুষদের থেকে। যারা এই জায়গায় বসবাস করতো। 
একসময় শিল্পীদের প্রাণ কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত এই ভেনিস শহর শিল্প কার্যের জন্য বিশ্ব বিখ্যাত। একসময় ভেনিস ইউরোপের ক্যাপিটাল অফ পৃন্টিং বলেও পরিচিত ছিল। সেখানে অসাধারণ কাঁচের কারুকার্যের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই ভেনিস শহর টি পরিচিত ছিল। 

টিভিতে বা বিভিন্ন ম্যাগাজিনে ইতালির খাবারের চর্চা আমরা প্রায়ই দেখে থাকি। তাই তারা তাদের খাবারের জন্য গর্বিত। তারা মনে করে যে ইউরোপিয়ানদের তারাই নাকি রান্না শিখিয়েছে। আবার তারা এটাও দাবি করে যে চীনাদের মাধ্যমে আইসক্রিমের সঙ্গে ও কফির সঙ্গে বিশ্ব কে পরিচয় করিয়ে দেবার কৃতিত্ব টাও তাদেরই।  আবার ফ্রেঞ্চ ফ্রাইচ বানানো নাকি ইটালিয়ান রা শিখিয়েছে। ভালো খাবারের সঙ্গে পরিচয় ইটালিয়ান রা অনেক আগেই পেয়েছে। পারমেশন চিজ প্রথম তৈরি হয় পার্মা তে, যা ইতালি তে অবস্থিত। ইতালিয়ান পিজ্জা এবং পাস্তা এগুলি সারা বিশ্বেরই পছন্দের খাবার। 

বিশ্বের প্রথম সারির উন্নত অর্থনীতির সম্পন্নদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং গাড়ি এবং নানারকম জিনিসের উৎপাদনের জন্য ইতালি পরিচিত। নামকরা গাড়ির কোম্পানি যেমন ল্যাম্বরগিনি, ফেরারির হেডকোয়ার্টারও ইতালিতে অবস্থিত।

ইটালি তে অপরাধের মাত্রা অনেক বেশি। তাই এই অপরাধীরা দেশের অর্থনীতিতে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব ফেলে। দুবাইয়ের মতো ইটালির পুলিশও তাদের দামি গাড়ির ব্যবহারের জন্য জনপ্রিয়। বিশ্বের দামি দামি গাড়ির কোম্পানি যেমন ল্যাম্বরগিনির গাড়ি এখানকার পুলিশ ফোর্স ব্যবহার করে।

ইতালির আরও একটা শহর মিলান তার ফ্যাশন এবং ডিজাইনের জন্য প্রসিদ্ধ। তাই একে আবার বিশ্বের ফ্যাশন এবং ডিজাইন ক্যাপিটাল বলা হয়। তবে এই শহরের পরিচয় ফুটবলের জন্যও আছে। নামকরা সব ফুটবলের মাঠ এবং ফুটবল দল যেমন ইন্টার মিলান, এসি মিলান এই শহরের। 

আর ফুটবল এবং ইটালি এই দুটোকে আলাদা করা কঠিন এখানকার মানুষের প্রিয় খেলা ফুটবল। তাই ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল গুলির তালিকায় ইতালি নেশনাল ফুটবল টিম আছে। যদিও 2018 বিশ্বকাপে ইতালি কোয়ালিফাই করতে পারেনি, তবুও ইতালির সফলতার গল্প অতীতকালের মতো ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে। 

ইতালির একটি শহরে জ্যান্ত মানুষ দিয়ে দাবা খেলা হয়। মানুষ দিয়ে দাবা খেলার জন্য শহরটা জনপ্রিয়। এই খেলা কয়েক শ বছরের পুরনো।  

2000 সালের দিকে বিশ্বের দ্বিতীয় সব থেকে ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য ইতালি বিখ্যাত ছিলো। ফলে ইতালিতে মেয়েদের সম্ভাব্য আয়ুকাল  85 বছর এবং ছেলেদের 80 বছর । কিন্তু বর্তমানে যে সারা বিশ্বে মহামারী করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে উন্নত চিকিৎসা ব্যাবস্থা থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত সবচেয়ে মানুষ বেশি মারা গিয়েছে এই ইতালি তে ।

তো এই ছিলো স্বপ্নের দেশ ইতালি সম্পর্কে কিছু তথ্য।। 



1 টি মন্তব্য :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

স্ট্যাচু অব লিবার্টির ইতিহাস | Statue of Liberty | Bengali Gossip 24

কোন মন্তব্য নেই
স্ট্যাচু অব লিবার্টির ইতিহাস (Unknown Facts about Statue of Liberty)

স্ট্যাচু অব লিবার্টির ইতিহাস | Statue of Liberty | Bengali Gossip 24
Statue of Liberty 

প্রায় দেড়শ বছর ধরে আমেরিকার সাম্য আর মুক্তির প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি। আমেরিকার স্বাধীনতার 100 বছর উপলক্ষে ফ্রান্সের জনগণের পক্ষ থেকে ভাস্কর্যটি আমেরিকার জনগণকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। তো চলুন জেনে নিই স্ট্যাচু অব লিবার্টি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য। 

রোমান দেবীর অবয়ব সবুজ রঙের চাদরে আবৃত এক নারীর স্ট্যাচু এই স্ট্যাচু অব লিবার্টি ভাস্কর্যটির বাইরের নকশা করেন ফরাসি স্থাপত্যিক ফ্রেডরিক বার্থোল্ডি এবং এর ভিতরের নকশা করেন আরেক বিখ্যাত ফরাসি স্থাপত্যিক গুস্তাভ আইফেল। তিনি আইফেল টাওয়ারের নকশার জন্য বিখ্যাত। 

অতীতে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে আমেরিকাকে সাহায্য করেছিল ফ্রান্স। আমেরিকার স্বাধীনতা অর্জনের 100 বছর পূর্তিতে দুই দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে 1886 সালে ফ্রান্স ভাস্কর্যটি আমেরিকাকে উপহার দেয়। আমেরিকার নিউইয়র্কে লিবার্টি দ্বীপে স্ট্যাচু অব লিবার্টি কে স্থাপন করা হয়। কারণ তৎকালীন সময়ে বহু ইউরোপীয় আদিবাসী নিউইয়র্ক বন্দরের মাধ্যমে আমেরিকার প্রবেশ করেছিল। এই ভাস্কর্যটি সেইসব অধিবাসীদেরকে আমেরিকায় স্বাগত জানাতো। বর্তমানে প্রতিবছর প্রায় 35 লক্ষ লোক স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখতে আসে।

1924 সাল পর্যন্ত ভাস্কর্যটির নাম ছিল লিবার্টি এনলাইটেনিং দ্য ওয়ার্ড। পরবর্তীতে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় স্ট্যাচু অব লিবার্টি। ভাস্কর্যটির ডান হাতে রয়েছে জ্বলন্ত মশাল এবং বাম হাতে রয়েছে আইনের বই।

স্ট্যাচু অব লিবার্টির মুকুটের মধ্যে রয়েছে সাতটি কাটা। যা সাত মহাদেশ এবং সাত সমুদ্রকে নির্দেশ করে। স্ট্যাচু অব লিবার্টির মূল ভাস্কর্যটির উচ্চতা 151 ফুট 1 ইঞ্চি। তবে মাটি থেকে এর উচ্চতা 5 ফুট 1 ইঞ্চি। 

এর পায়ের কাছে পড়ে থাকা শেকল আমেরিকার মুক্তির প্রতীক। তামার তৈরি সমগ্র মূর্তিটির ওজন প্রায় আড়াই লক্ষ কেজি। স্ট্যাচু অব লিবার্টির ভেতরে 354 টি সিঁড়ির ধাপ অতিক্রম করে মূর্তির মাথায় ওঠা যায়। মূর্তির মুকুটের কাছে রয়েছে 25 টি জানালা। যা ওয়াচ টাওয়ার হিসেবে কাজ করে। 

স্ট্যাচু অব লিবার্টি সম্পূর্ণ মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে ফ্রান্সে। লোহার ফ্রেমের ওপর তামার পাত দিয়ে 300 টি খন্ডে তৈরি হয়েছে মূর্তিটি। 1885 সালের 214 বক্সে করে জাহাজে করে ভাস্কর্যটি আমেরিকায় পাঠানো হয়। 

1886 সালের 28 অক্টোবর তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ভাস্কর্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্ট্যাচু অব লিবার্টি প্রথম থেকেই দেখতে সবুজ রঙ-এর ছিল না। এমনকি একে সবুজ রং করা হয়নি। মূর্তিটি তামার তৈরি হওয়ায় এর রঙ ছিল তামাটে। দীর্ঘকাল ধরে এর চারদিকে থাকা সমুদ্রের জলীয়বাষ্পের সাথে তামার বিক্রিয়ায় মূর্তিটি সবুজ রঙ ধারন করেছে। এটি এক ধরণের মরিচা।

শুরু থেকেই স্ট্যাচু অব লিবার্টি কে নিউইয়র্কের হাডসন নদীর পাড়ে বসানোর পরিকল্পনা ছিলনা। ভাস্কর্যটির স্থপতি ফ্রেডরিক বার্থোল্ডি মূর্তিটির নকশা করেছিলেন মিশরের সুয়েজ খালের পাড়ে স্থাপনের জন্য কিন্তু বিভিন্ন কারণে মিশর এই ভাস্কর্য নির্মাণের অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরবর্তীতে নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে ভাস্কর্যটি আমেরিকা স্থাপন করা হয়।

সুয়েজ খালের পারে মূর্তি স্থাপনের আগে এর নামকরণ করা হয়েছিল ইজিপ্ট ব্রিঙ্গিং লাইট টু এশিয়া।

তো এই ছিলো সাম্য এবং মুক্তির প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা স্ট্যাচু অব লিবার্টি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের ইতিহাস

কোন মন্তব্য নেই
ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তার (British Empire History in Bengali)

ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের ইতিহাস

বর্তমান যুক্তরাজ্যের অধীনে থাকা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের প্রশাসনিক এলাকা গুলো ব্রিটিশ সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত ছিল। একসময় ব্রিটিশরা পৃথিবীর মোট আয়তনের চারভাগের একভাগ অঞ্চল এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ মানুষকে সরাসরি শাসন করতো। ছোট একটি দ্বীপরাষ্ট্র ব্রিটেন তাদের কূট-পরিকল্পনার মাধ্যমে গড়ে তুলেছিল পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য। আর সেই কারণেই বলা হতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য কখনো অস্ত হয় না। তো চলুন আজ আমরা জেনে নিই ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যর বিস্তার এবং তাদের কুখ্যাত শাসন আমল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের যাত্রা শুরু হয়েছিল 17 শতকের শুরুর দিকে। ফরাসিদের সাথে পাল্লা দিয়ে সেই সময় কিছু ব্রিটিশ জয়েন্ট স্টক কম্পানি উত্তর আমেরিকার বেশ কিছু অঞ্চল এবং ছোট ছোট কিছু ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বাণিজ্য করতে গিয়ে এসব অঞ্চল দখল করে নেয়। সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। পরবর্তীতে একটানা 200 বছর ব্রিটিশ রা সবচেয়ে শক্তিশালী জাতি হিসেবে বিশ্ব কে শাসন করেছে। ব্রিটিশ রা তাদের আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে উপনিবেশ শাসনের ক্ষেত্রে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের চেয়ে এগিয়ে ছিল। তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার ছিল তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে আধুনিক বাণিজ্য ও সামরিক জাহাজ।

এছাড়া তারা উপনিবেশগুলোতে শিক্ষাব্যবস্থা যাতায়াত ব্যবস্থা এবং তারের সাহায্যে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কারণে নিজেদেরকে আধুনিক শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল। কানাডা থেকে ইন্ডিয়া, অস্ট্রেলিয়া থেকে নাইজেরিয়া, ক্যারিবিয়ান থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল দখলের মাধ্যমে তারা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আয়তন ছিল 3 কোটি 37 লক্ষ বর্গকিলোমিটার। যা পৃথিবীর মোট আয়তনের চারভাগের একভাগ। বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ রা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লেও তাদের আরেকটি ব্রত ছিল ধর্মপ্রচার করা। নিজেরা সব রকমের অধর্ম চর্চা করলেও তাদের ভাবখানা ছিলো এমন যেন তারা সরাসরি ঈশ্বর কর্তৃক নির্বাচিত শাসক।

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় উপনিবেশ ছিল ভারতবর্ষ। ভারতের কর্তৃত্ব লাভ করার কারণে ইউরোপের অন্যান্য ঔপনিবেশিক শক্তি ব্রিটিশদের রীতিমতো হিংসা করতো। 17 শতকের মাঝামাঝি ব্রিটিশরা ভারতের খুব ছোট কিছুর সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা শাসন করতে শুরু করে। কিন্তু আঠারো শতকের মধ্যেই তারা ভারতীয় উপমহাদেশের সিংহভাগ অঞ্চল দখল করেছে নেয়। ব্রিটিশ রা মুলত ভারতীয় উপমহাদেশের কর্তৃত্ব গ্রহণ করেছে এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানীয় শাসকদের সহায়তায়। 

প্রথমদিকে তারা ছোটো রাজাদের হয়ে অন্য রাজাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। এরপর ভারতবর্ষের শাসক রা একসময় দেখতে পায় তারা নিজেরা নিজেদের সাথে লড়াই করতে করতে ততদিনে ব্রিটিশরা উপমহাদেশ গ্রাস করে ফেলেছে। ব্রিটিশরা তাদের কূট চক্রান্তের বলে ভারত মহাসাগরের দ্বীপ থেকে হিমালয় পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় 600 টি রাজ্য দখল করতে সক্ষম হয়। এই উপমহাদেশের মূল্যবান কাপড়, চা এবং মসলা ইউরোপ সহ পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে বিক্রির মাধ্যমে ব্রিটিশরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। এছাড়া উপমহাদেশের জনগণের কাছ থেকে কর গ্রহণের মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

ভারতীয় উপমহাদেশ ব্রিটিশদের কাছে ছিল সোনার ডিম পাড়া হাঁসের মতো। 1765 সালের পর থেকে নানা উপায়ে ব্রিটিশরা সাধারণ ভারতীয় জনগনের কাছ থেকে খাজনা সংগ্রহ করতে শুরু করে। সেই খাজনার টাকা দিয়েই ব্রিটিশরা তাদের ব্যবসার জন্য স্থানীয় পণ্য সামগ্রী কিনতে থাকে। অর্থাৎ ভারতে ব্যবসা করতে এসে ভারতীয় জনগণের কাছ থেকে খাজনা আদায় করে সেই টাকায় তারা ব্যবসার মূলধন হিসেবে ব্যবহার করে। 

এছাড়া ইউরোপের বাজারে ভারতীয় পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এসব পণ্য তার দ্বিগুন দামে বিক্রি করতো। ভারত বর্ষ থেকে সংগৃহীত পণ্যে ব্রিটিশদের ব্যাবসা জমে ওঠে অভাবনীয় পর্যায়। সেইসাথে নিজেরা কোন পণ্য উৎপাদন না করেও ইউরোপের বাজারে তারা সবচেয়ে বড় পুঁজিপতি বনে যায়। ব্রিটেনের শিল্প বিপ্লবের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় লোহা, আলকাতরা এবং গাছের গুড়ি বিপুল পরিমাণে ভারত থেকে পাচার করে নিয়ে যায়। 

একদিকে ভারতের অর্থ, অন্যদিকে খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমে ব্রিটিশ রা তাদের শিল্প বিপ্লব ঘটায়। শুধু তাই নয় ভারতের লুণ্ঠিত সম্পদ দিয়েই ব্রিটিশরা কানাডা অস্ট্রেলিয়া সহ অন্যান্য অঞ্চলের উপনিবেশগুলোতে শিল্পায়নে বিনিয়োগ করে। একটি গবেষণায় জানা যায় 1765 সাল থেকে 1938 সালের মধ্যে 45 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পদ ব্রিটিশরা ভারত থেকে পাচার করে নিয়ে গেছে। এই 45 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বর্তমানে যুক্তরাজ্যের জিডিপির প্রায় 17 গুণ বেশি।

ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থায় তাদের এই লুটরাজের কোন অধ্যায় দেওয়া হয় না। সারা বিশ্বব্যাপী অন্যায় আর শোষণের মাধ্যমে তারা যে সম্পদ গড়ে তুলেছে তার কোন সঠিক বিবরণ নেই তাদের পাঠ্যপুস্তকে। তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলে যাদেরকে আজ তার ছোটো দৃষ্টিতে দেখে অথচ তারা জানেই না তাদের পূর্বপুরুষ এইসব উপনিবেশ কে ইচ্ছাকৃতভাবে দারিদ্র সীমার নিচে ঠেলে ফেলে দিয়েছে। বরং ব্রিটিশ উপনিবেশের আভিজাত্য তারা তুলে ধরে তাদের বিদ্যালয়গুলোতে। যার ফলে এখনো অধিকাংশ ব্রিটিশ তাদের ঔপনিবেশিক অতীত নিয়ে গর্ববোধ করে।সেখানকার বহু নাগরিক এখনো মনে করে ব্রিটিশ শাসনের ফলে উপনিবেশগুলো লাভবান হয়েছে।

 2014 সালের একটি সার্ভে তে দেখা যায় 43% ব্রিটিশ মনে করেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভালো সাম্রাজ্য ছিল । যেখানে মাত্র 20 শতাংশ ব্রিটিশ মনে করে ব্রিটিশ উপনিবেশ গুলো খারাপ  ছিল। আর 25% বলেছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভালো ছিল না আবার খারাপ ও ছিলনা। সমালোচকদের দাবি ব্রিটিশরা তাদের উপনিবেশগুলোতে গণহত্যা, দুর্ভিক্ষ এবং নির্যাতন নিপিরণের মত ঘৃণ্য ঘটনা ঘটিয়েছে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা বিভিন্ন দুর্ভিক্ষে ভারতের প্রায় 1 কোটি 20 লাখ থেকে 2 কোটি 90 লাখ মানুষ মারা যায়। 

অথচ একই সময়ে ভারত থেকে বছরের লাখ লাখ টন গম পাচার হতো ব্রিটেনে। 1943 সালে বাংলায় যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তাতে শুধু মারা যায় 40 লাখ মানুষ। অথচ তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল সেসময় বাংলায় উৎপাদিত খাদ্যশস্য ব্রিটিশ সেনাদের জন্য সরবরাহ করতে আদেশ দিয়েছিল। উইনস্টন চার্চিল বাংলার দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে বলেছিল আমি ভারতীয়দের ঘৃণা করি। কারণ তারা মানুষ নয়, পশুর মতো। আর তাদের ধর্ম ও পাশবিক। এই দুর্ভিক্ষের জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। কারণ খরগোশের মত অসংখ্য সন্তান জন্ম দিয়ে দ্রুত জনসংখ্যা ভারতের অভাবে এই দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। ভারতবর্ষে মানুষের প্রদত্ত খাজনা যদি ভারতবর্ষের কল্যাণে ব্যয় করা হতো তাহলে কয়েক শত বছর ধরে এ অঞ্চলের মানুষের সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হতো না। ব্রিটিশরাজ ভারতবর্ষের দ্বিতীয় বৃহৎ সাম্রাজ্য হওয়ার পরেও তারা এই অঞ্চলের জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারেনি।

 অতীতে ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য ছিল মৌর্য সাম্রাজ্য। আর ভারতীয় উপমহাদেশের তৃতীয় বৃহৎ সাম্রাজ্য ছিল ব্রিটিশদের ঠিক আগেই শাসন করা মুঘল সাম্রাজ্য। 

তো এই ছিলো ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তার।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পর্তুগাল সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন | Bengali Gossip 24

কোন মন্তব্য নেই
পর্তুগাল সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য (Unknown Facts about Portugal) 

পর্তুগাল সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন | Bengali Gossip 24

আজকে আমরা ইউরোপের একটা এমন দেশ সম্পর্কে জানবো যার ইতিহাসটা অনেক পুরনো এবং বিশ্বের একটি প্রাচীন এবং শক্তিশালী দেশ হওয়ায় এক সময় সেটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে পেরেছিল। এভেরিও উপদ্বীপের অন্তর্গত দক্ষিণ পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটি পর্তুগাল। যা এভেরিও উপদ্বীপ এবং ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত প্রাচীন দেশগুলির একটি। এবং সেই 868 সালে মাত্র একটা কাউন্টি হিসেবে স্থাপিত পর্তুগাল 1128 খ্রিস্টাব্দে হেন্ডি্ক্সের এর নেতৃত্বে থাকা পর্তুগীজ সৈন্য রা যে যুদ্ধে জয়লাভ করে তারপরেই হেন্ডি্ক্স 1139 খ্রিস্টাব্দে প্রথম পর্তুগীজ রাজা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। এবং পরবর্তীকালে 15 এবং 16 শ শতাব্দীর দিকে পর্তুগাল বিশ্বের একটা ক্ষমতাশীল দেশ হিসেবে উঠে আসে। কিন্তু এই পর্তুগিজ পরিব্রাজকের পৃথিবীতে সমুদ্রপথের দারুণভাবে কাজে লাগানোর পদ্ধতি খুঁজে বার করে। তাই বিখ্যাত পরিব্রাজক ভাস্কোডাগামা সেই রকমই একটা জল পথের সন্ধান পান। যার মাধ্যমে ভারত এবং ব্রাজিলে আসা যায়। পর্তুগাল নামটা এসেছে রোমান্স সেল্টিক জায়গা পরতুস সেলে থেকে। যা পর্তুগালের একটি প্রাচীন শহর ও বন্দর এবং বর্তমানে জায়গাটা গ্রেটার পর্তু নামে পরিচিত। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক পর্তুগাল সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য ।

পর্তুগালের মোট আয়তন 92212 বর্গ কিলোমিটার। যার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আটলান্টিক মহাসাগর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে স্পেন রয়েছে। আর আটলান্টিক মহাসাগর এর উপরে থাকা দুটি দ্বীপপুঞ্জ এসোরেস এবং মাদেরা দুটি আলাদা আলাদা শ্বশাসিত অঞ্চল এবং এই দুটি দ্বীপপুঞ্জ পর্তুগালের অন্তর্গত। এই দেশের রাজধানীর নাম লিসবন।যা পৃথিবী তথা পশ্চিম ইউরোপের সবচেয়ে প্রাচীন শহরের একটি। এবং লিসবন এই পর্তুগালের সব থেকে বড় শহর। তাগুস নদী পর্তুগালের মূল ভূখন্ড কে মোটামুটি ভাবে দু'ভাগে বিভক্ত করে। এই নদী স্পেনের থেকে উৎপন্ন হয় পর্তুগালে প্রবেশ করে এবং শেষ পর্যন্ত লিসবনের কাছে মোহনা তৈরি করে আটলান্টিক মহাসাগরে মিশে যায়। পর্তুগালের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট পিকো। যা এসোরেস দ্বীপপুঞ্জের পিকো নামের দ্বীপে অবস্থিত। 

ইউনাইটেড নেশনস দ্বারা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দেশের আশেপাশের সামুদ্রিক অঞ্চলগুলিতে ইউরোপ তথা পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ সেখানে নানারকম অনুসন্ধান ও সামুদ্রিক সম্পদের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়, আর তার ভিত্তিতে যে সকল দেশের সীমানা বেশি তাদের মধ্যে পর্তুগাল আছে। যার বিশেষ অধিকারপ্রাপ্ত এলাকার সীমানা 17 লক্ষ 27 হাজার 408 বর্গকিলোমিটার। 

যা আয়তনে পৃথিবীতে 11 তম। 2016 অনুযায়ী পর্তুগালের মোট জনসংখ্যা 1 কোটি 3 লাখ 9 হাজার 573 জন। যাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষজন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ভুক্ত এবং দেশের নাগরিকদের পর্তুগীজ বলে। পর্তুগালের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ পর্তুগীজ নামক এথনিক গোষ্ঠীর যাদের মধ্যে একটা ভাষার প্রচলন বেশি পর্তুগীজ। যা পর্তুগালের আধিকারিক ভাষা এবং স্থানীয় আরো একটি সর্বস্বীকৃত ভাষা মিরান্ডিস, যে ভাষার নিদর্শন পর্তুগালের উত্তর-পূর্ব ভাগে বেশি। 

মানব উন্নয়নের রিপোর্ট অনুযায়ী পর্তুগালের মানুষদের সম্ভাব্য আয়ুকাল 81 বছর। যেখানে দেশের পুরুষের তুলনায় মহিলাদের আয়ুকাল বেশি। 

আর ইউরোপ তথা বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য পর্তুগালের স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিখ্যাত।

পর্তুগাল একটা পুরনো সভ্যতা বিশিষ্ট দেশ। তাই সেখানে বহু প্রাচীন টাওয়ার বা বিল্ডিং থাকাটা স্বাভাবিক। তাই আজ পর্তুগালে প্রচুর জায়গা ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে গণ্য হয়েছে। তাই পর্তুগালের লিসবন, পর্তো এবং মাদেরা জনপ্রিয় পর্যটক স্থান। এইসব জায়গাগুলোতে প্রত্যেক বছর বহু পর্যটক বেড়াতে আসে। তাই পর্যটন শিল্প পর্তুগালের অর্থনীতির একটা অংশ। পর্তুগালের জাতীয় মুদ্রা ইউরো। আর দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক টি ব্যাংকো ডে পর্তুগাল। 

এই দেশটির আয়ের প্রধান উৎস কিছু প্রধান খনিজ সম্পদ যেমন কপার এবং ইউরেনিয়াম, কাগজ শিল্পের উপযোগী কিছু রপ্তানি, কিছু গাড়ি নির্মাণ শিল্প এবং চাষাবাদ এবং অ্যালকোহল রপ্তানির উপর নির্ভর। পর্তুগাল বিশ্বের সবথেকে বেশি পরিমাণ অ্যালকোহল রপ্তানিকারী দেশ গুলির মধ্যে পড়ে।

 পর্তুগালের প্রধান বিমান পরিবহন সংস্থা টি এ পি এয়ার পর্তুগাল। এর সদর দপ্তর লিসবনে অবস্থিত। বিশ্বের সব থেকে বড় সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট গুলির মধ্যে পর্তুগালের প্ল্যান্ট গুলি আছে। এছাড়া দেশের ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই এর মূল উৎস হিসেবে কিছু পাওয়ার প্লান্ট দেশের সবথেকে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। 

পর্তুগালের 99% মানুষ শিক্ষিত। তাই পৃথিবীর কিছু বিশেষ প্রকার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কেন্দ্র পর্তুগালে রয়েছে। 

পর্তুগালের চিত্র শিল্প এবং সাহিত্য প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্ব প্রসিদ্ধ। আর তার প্রমাণ বিভিন্ন দেশে এখনও দেখা যায়। কারণ পর্তুগিজরা একটা সময় পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল। 


আর তাছাড়া তাদের সংস্কৃতির মধ্যে তাদের খাবার ও খুবই জনপ্রিয়। সেখানে মাছের বিভিন্ন রকমের খাবার খেতে পাওয়া যায়। এর পিছনের কারণটা হলো পর্তুগাল আটলান্টিক মহাসাগরের পার্শ্ববর্তী দেশ তাই পর্তুগালে মাছের তৈরি খাবার এতো জনপ্রিয়। 

বর্তমানে পর্তুগিজ মানুষদের সংখ্যা পর্তুগালের পর সব থেকে বেশি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দেখতে পাওয়া যায়। ইউরোপীয় দ্বিতীয় সবথেকে লম্বা ব্রিজ ভাস্কোদাগামা ব্রিজ পর্তুগালে আছে। যা দৈর্ঘ্যে 12.345 কিলোমিটার। ইউরোপের তথা অন্যান্য উপনিবেশিক শক্তির মধ্যে পর্তুগিজরা সর্বপ্রথম দাসত্ব প্রথার অবসান ঘটায়। 

ফুটবলের সঙ্গে পর্তুগালের সম্পর্ক অনেক পুরনো। সময় টা ছিল 1875 সাল।যখন থেকে পর্তুগালে ফুটবল খেলার আয়োজন শুরু হয় এবং তারপরেই বিভিন্ন ফুটবল ক্লাব গুলোর গঠন ও শুরু হয়েছে। এইভাবে বেশ কয়েক বছর চলার পথে কয়েকটি নামি দামী খেলোয়াড় যেমন ফিগো এবং রোনাল্ডোর মতো বিশ্ব প্রসিদ্ধ খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বিশ্বের বিখ্যাত ফুটবল ক্লাবগুলোর সফলতম ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত থাকা মৌরিনহো এই পর্তুগাল থেকে এসেছে। তাই সেই 1998 সালের বিশ্বের 43 তম স্থান থেকে 2010 ফিফা ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংয়ে পর্তুগাল তাদের সর্বকালের সেরা তৃতীয় নম্বর স্থানটি পায়। সফলতার গতি টা তারা আজও বাঁচিয়ে রেখেছে তাদের পারফরমেন্সের দাঁড়া। ফলে বিশ্বের প্রথম দশটি ফুটবল দলের মধ্যে পর্তুগাল থাকে। তবে পর্তুগালে প্রচলিত জনপ্রিয় খেলা গুলির মধ্যে গাড়ি রেস একটি জনপ্রিয় খেলা। বিশেষ করে রেলি অফ পর্তুগাল একটা বিশ্ব প্রসিদ্ধ গাড়ি প্রতিযোগিতা। 

তো এই ছিলো পর্তুগাল সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য ।


কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন