Bengali Gossip 24

Knowledge is Power 😎

ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস । Mughal Empire - BG 24

কোন মন্তব্য নেই
মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস (Mughal Empire History in Bengali) 

ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস । BG 24

ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় মুঘল সাম্রাজ্য। কাবুলের সিংহাসন আরোহণের মাধ্যমে মুঘলদের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল ভারতবর্ষের সিংহভাগ অঞ্চল মুঘলদের অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে তার চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। শিল্প-সংস্কৃতি অভিনব শাসনব্যবস্থা ও নান্দনিকতার জন্য মুঘল সাম্রাজ্য যেমন বিখ্যাত, ঠিক তেমনি আভ্যন্তরীণ কলহ এবং মাত্রাতিরিক্ত বিলাসিতার জন্য মুঘলরা সমালোচিতও বটে। 

মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর এর হাত ধরে 1526 সালে যে সাম্রাজ্যের সূচনা হয়েছিল 1857 সালের দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের রেঙ্গুন নির্বাসনের মধ্য দিয়ে তার পরিসমাপ্তি ঘটে। তো চলুন জেনে নিই ভারতবর্ষে প্রায় 300 বছর শাসন করা মুঘল সাম্রাজ্য সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।

মুঘল সাম্রাজ্য ভারতীয় উপমহাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম সাম্রাজ্য। ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্যঃ ছিল মৌর্য সাম্রাজ্য এবং ব্রিটিশ রা ছিলো ভারতের দ্বিতীয় বৃহৎ সাম্রাজ্য। মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর 1526 সালে পানিপথের যুদ্ধে আফগান শাসক ইব্রাহিম লোদীকে পরাজিত করে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা করেন।

মোঘলরা মূলত মঙ্গোলীয় এবং তুর্কী বংশোদ্ভূত। মুঘল সম্রাট বাবর পিতার দিক থেকে তৈমুর লং এবং মাতার দিক থেকে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের সীমানা বর্তমান বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিল। 

মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর 1483 সালের 20 ফেব্রুয়ারি মধ্য এশিয়ার বর্তমান উজবেকিস্তানের ফরগনা রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ওমর শেখ মির্জা ছিলেন ফরগনা রাজ্যের অধিপতি। পিতার মৃত্যুর পর মাত্র 11 বছর বয়সে বাবর ফরগনা রাজ্যের সিংহাসন আরোহন করেন। সিংহাসনে বসার পর তিনি সাম্রাজ্যঃ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উজবেকিস্তানের সমরকন্দ দখলের পরিকল্পনা করেন। 

1497 সালে বাবর সমরকন্দ দখল করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে বাবরের অনুপ্সথিতিতে 1501 সালে উজবেক নেতা সাইবানি খান সমরকন্দ দখল করে নেয়। তখন নিজের রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবর হিন্দুকুশ পর্বতমালা অতিক্রম করে কাবুলে চলে আসেন। সেসময় কাবুলের শাসক গোষ্ঠীর মধ্যকার অন্তর্কলহের সুযোগে 1504 সালে বাবর কাবুল দখল করে নেয়। এরপর পারস্যের সম্রাট শাহ ইসমাইলের সাহায্যে 1511 সালের দিকে বাবর পুনরায় সমরকন্দ জয়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হোন। এর ফলে বাবর তার নতুন সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য ভারতবর্ষের দিকে দৃষ্টিপাত করেন। বাবর 1519 থেকে 1522 সালের মধ্যে আরো অনেক গুলি জায়গা দখল করে নেয়। এরপর 1524 সালে বাবর বর্তমান পাকিস্তানের লাহোর নিজের অধিকার নিয়ে আসেন। 1525 সালে বাবুর দিল্লি জয় করার লক্ষ্যে কাবুল থেকে অভিযান শুরু করার পর দৌলতখান কে পরাজিত করে পাঞ্জাব দখল করে নেন।

1526 সালের 12 এপ্রিল বাবর পানিপথ প্রান্তরে সৈন্য সমাবেশ করে। এই পানি পথে প্রান্তরে ঐতিহাসিক পানিপথের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। অভিনব কৌশল ও দক্ষতায় বাবর মাত্র 12 হাজার সৈন্য নিয়ে আফগান শাসক ইব্রাহিম লোদীকে পরাজিত করেন। যুদ্ধে জয়লাভের ফলে জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর দিল্লির ও আগ্রা দখল করে নেয়। এর মধ্য দিয়েই মূলত ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের যাত্রা শুরু হয়। 

1526 সালে দিল্লি দখল করে মুঘল সম্রাট বাবর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল বিয়ানা, গাজীপুর, গোয়ালিয়র দখল করে নেয়। 1526 থেকে 1529 সালের মধ্যে বিভিন্ন যুদ্ধে রাজপুত ও অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাজিত করে পাটনা দখল করে নেয়। অন্যদিকে বিহার, বাংলা সহ বিভিন্ন রাজ্যে বাবরের অধীনে চলে আসে। মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার মাত্র চার বছরের মাথায় 1530 সালে মাত্র 47 বছর বয়সে সম্রাট জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর মৃত্যুবরণ করেন। 

মুঘল সম্রাট জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর এর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র হুমায়ূন মুঘল সাম্রাজ্যের সিংহাসন আরোহন করেন। সম্রাট বাবর তার শাসনামলে মুঘল সাম্রাজ্যের সীমানা কাবুল থেকে গৌগুড়া, গোয়ালিয়র থেকে বাংলা পর্যন্ত বিস্তৃত করলেও সেই সময় ভারতবর্ষে শাসনতান্ত্রিক জটিলতা এবং বিদ্রোহ সহ নানা ধরনের অস্থিরতা বিদ্যমান ছিল। এরই প্রেক্ষাপটে মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের শাসনামলেও বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। 

এরপর যুদ্ধে সম্রাট হুমায়ুন তৎকালীন দুর্ধর্ষ সমর নেতা শের শা কাছে পরাজিত হয়, ফলে শেরশা দিল্লি আগ্রা দখল করে নেয়। পরবর্তীতে পারস্যের সম্রাট শাহ তমাশ্পের সহযোগিতায় হুমায়ুন প্রথমে লাহোর উদ্ধার করেন। এরপর 1555 সালের জুলাই মাসে সম্রাট হুমায়ুন দিল্লি আগ্রা দলের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষে পুনরায় মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর আকস্মিকভাবে 1556 সালে সম্রাট হুমায়ূনের মৃত্যু ঘটে। 

হুমায়ুনের মৃত্যুর পর মুঘল সিংহাসন আরোহণ করেন তার ছেলে সম্রাট আকবর। ভারতবর্ষের শাসনতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা আনার লক্ষে তিনি আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে মনোযোগী ছিলেন সম্রাট আকবর। তিনি মোগলদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজপুতদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য এক রাজপুত নারীকে বিবাহ করেন। এর ফলে মুঘল সাম্রাজ্য তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে বড় সীমানা অধিকারী হয়। ফতেপুর সিক্রি, অমৃতসর মন্দির দিল্লির জামে মসজিদসহ বিভিন্ন ইমারত নির্মাণের কারণে সেই আমলটি শিল্প সংস্কৃতি বিকাশে উর্বর সময় হিসেবে বিবেচিত হয়। ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রকল্পে সম্রাট আকবর দ্বীন-ই-ইলাহী নতুন এক ধর্মমত প্রতিষ্ঠা করেন। এই ধর্মের অনুসারী ছিল মাত্র 18 জন। সম্রাট আকবরের সময়ে মুঘল সাম্রাজ্য সবচেয়ে বিকশিত হয়েছিল। আর তাই তাকে শ্রেষ্ঠ মুঘল সম্রাট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 1605 সালে সম্রাট আকবর মৃত্যুবরণ করেন। 

মুঘল সাম্রাজ্যের চতুর্থ সম্রাট জাহাঙ্গীর 1605 থেকে 1627 সাল পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্যের শাসনকার্য পরিচালনা করেন। মাদক ও নারীতে আসক্ত সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে মুঘল সাম্রাজ্য কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে তার শাসনামলেই সমগ্রবাংলা অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। 1610 সালে সম্রাট জাহাঙ্গীর বাংলার রাজধানী বিহারের রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। তিনি সরকারি কাজে বাংলা ভাষার পাশাপাশি ফরাসি ভাষার প্রচলন করেন। সম্রাট জাহাঙ্গীর 1627 সালে মৃত্যুবরণ করেন।

সম্রাট জাহাঙ্গীরের পুত্র খুররম সম্রাট শাহজাহান নাম ধারণ করে 1628 সালে মুঘল সাম্রাজ্যের পঞ্চম সম্রাট হিসেবে দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন। সম্রাট শাহজাহানের শাসনামলকে মুঘল শাসনামলে স্বর্ণযুগ হিসেবে অভিহিত করা হয়। শিল্প সংস্কৃতি বিকাশে সম্রাট শাহজাহানের পৃষ্ঠপোষকতার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে পৃন্স অফ বিল্ডার্স আখ্যা দেয়া হয়। সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজ এর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসার নিদর্শন হিসেবে যমুনা নদীর তীরে দুর্লভ পাথরের তৈরি সমাধি সৌধ তাজমহল নির্মাণ করেন। সম্রাট শাহজাহানের শাসনামলে নির্মিত স্থাপত্য গুলির মধ্যে রয়েছে দিল্লির লালকেল্লা, আগ্রা দুর্গ দেওয়ান-ই-আম, দেওয়ান-ই-খাস প্রভৃতি। সম্রাট শাহজাহানের অমর সৃষ্টি হচ্ছে কোহিনুর হীরা, মনি মুক্তা খচিত ময়ূর সিংহাসন। যা 1739 সালে পারস্যের সম্রাট নাদির শাহ লুন্ঠন করে নেয়। সম্রাট শাহজাহানের চার পুত্রের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের বলি হিসেবে পত্র ঔরঙ্গজেব তাকে গৃহবন্দী করেন। 1666 সালে সম্রাট শাহজাহান আগ্রার দুর্গে বন্দী থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। 

মুঘল আমলে নির্মিত ভারতের উত্তর প্রদেশের আগ্রায় অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম বিস্ময়কর এক স্থাপনা হলো তাজমহল। তাজমহলের মত এমন নিদর্শন পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে না। সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের স্মৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসা জানাতে তাজমহল তৈরি করেছিলেন সম্রাট শাহজাহান। সেই অনন্য কীর্তি তাজমহল' আজও বিশ্ববাসীর কাছে এক অপার বিস্ময়ের নাম।

সম্রাট শাহজাহানের উত্তরাধিকারী চার পুত্রের প্রতিযোগিতায় ঔরঙ্গজেব অন্যদের পরাস্ত করে। ঔরঙ্গজেব আলমগীর নাম ধারণ করে সিংহাসন আরোহন করেন। সম্রাট ঔরঙ্গজেবের শাসনামলে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য সবচেয়ে বেশি কলঙ্কিত হয়। 
 প্রায় 49 বছরের শাসনামলে সম্রাট ঔরঙ্গজেব তার রাজ প্রজাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। 1707 সালে সম্রাট ঔরঙ্গজেব মৃত্যুবরণ করেন। 

সম্রাট ঔরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর মুঘল সাম্রাজ্যের বিশৃঙ্খলা ও বিদ্রোহ দেখা দেয় সম্রাট ঔরঙ্গজেব পুত্র প্রথম বাহাদুরশাহ প্রশাসন সংস্কারের চেষ্টা করেন। কিন্তু 1712 সালে প্রথম বাহাদুর শাহ মৃত্যুবরণ করলে মুঘল সাম্রাজ্য পতনের যাত্রা শুরু হয়। সম্রাট মহম্মদ শাহের শাসনামলে মুঘল সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে শুরু করে। এ সময়ে মধ্য ভারতের অধিকাংশ এলাকা মারাঠা সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।

নাদির শাহের সময়ে দিল্লি আক্রমণ করলে মুঘল শক্তি হ্রাস পেতে শুরু করে। সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম মুঘল সাম্রাজ্যের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হয়। 1761 সালে দ্বিতীয় শাহ আলম আফগান আমির আহমদ শাহ আবদালির সহযোগিতায় মারাঠা বাহিনীকে পরাজিত করে। কিন্তু 1776 সালে মারাঠারা পুনরায় দিল্লি দখল করে নেয় শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ এর শাসনামল শুধুমাত্র শাহজাহানবাদ শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। সিপাহী বিদ্রোহের সমর্থন দানের কারণে তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ দায়ের করে ব্রিটিশরা। এর প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত রেঙ্গুন বর্তমান মিয়ানমারের নির্বাসনে পাঠানো হয়। দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ এর নির্বাচনের মধ্য দিয়েই মূলত ভারতবর্ষে প্রায় সাড়ে 300 বছর শাসন করা মুঘল সাম্রাজ্যের সমাপ্তি ঘটে।

তো এই ছিলো মুঘল সাম্রাজ্যের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।। 


কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

তিব্বত (Tibet) সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন | BG24

কোন মন্তব্য নেই
তিব্বত সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য 

তিব্বত সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য


শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ ও চারিদিকে ব্যস্ত শহরের উচু উচু বিল্ডিং অভিশ্রান্ত বাড়তে থাকা গাড়ির হর্ন থেকে একটু মুক্তি পেতে ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই একটা জায়গার কথা মনে পড়ে যায় সেটি হলো তিব্বত। এটি মূলত বৌদ্ধ এবং বন ধর্মের মানুষের অঞ্চল। বর্তমানে পৃথিবীর সবথেকে উঁচু স্থানে অবস্থিত প্রাসাদে টা তিব্বতের রাজধানী লাসার মধ্যে অবস্থিত। বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামার একসময়ের এই প্রাসাদটি তার শীতকালের বাসস্থান ছিল। এখন প্রাসাদ টির নাম পোটলা পেলেস। 


চায়নার একটা স্বশাসিত অঞ্চল এখনই তিব্বত। দেশের চারিদিকে যদি নজর রাখেন তবে দেখতে পারবেন আশেপাশের সব জায়গাতেই ঢেউ খেলানো উঁচু-নিচু পাহাড় পর্বত। তাইতো হিমালয়ের কিছুটা পার্ট তিব্বতে থাকায় এবং এর উঁচু উঁচু শৃঙ্গ গুলোর জন্য অনেকেই এর ছদ্মনাম দিয়েছেন পৃথিবীর ছাদ। সেই প্রাচীন কালের বৌদ্ধ ধর্মের একেবারে উৎস স্থল ছিলো তিব্বত। সেখানকার বৌদ্ধ ধর্মগুরু, স্তূপ এবং শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ অনেক আধ্যাত্মিক এবং শান্তিপ্রিয় মানুষকে টেনে নিয়ে যায় এই জায়গায়। তো চলুন জেনে নিই তিব্বত সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য যা হয়তো আপনি জানেন না। 

চীনের একটা অংশ বা বলতে পারেন একটা অঞ্চল এই তিব্বত। এর চারিদিকে ভারত, নেপাল, ভুটান এবং উত্তর-পূর্ব দিকে সেন্ট্রাল চায়না রয়েছে। তিব্বত সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত। যার দুটো অঞ্চল ছিল, হ্রদ অঞ্চলএবং নদী অঞ্চল। পৃথিবীর সবথেকে উঁচু শৃঙ্গ টা নেপাল এবং তিব্বতের সীমানাতেই রয়েছে। যার নাম মাউন্ট এভারেস্ট। যার উচ্চতা 8848 মিটার। যার ফলে পাহাড় পর্বত অঞ্চল বেশি থাকায় আবহাওয়া মনোরম। 

বৌদ্ধ ধর্ম তিব্বতের প্রধান ধর্ম, তবে খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মের মানুষও তিব্বতে আছে। তিব্বতে তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্ম এবং বন এটা দুই প্রধান ধর্ম। তিব্বতীয় বৌদ্ধ ধর্ম মতে পূর্ব ভারত থেকে আসা সংস্কৃত, বৌদ্ধ সংস্কৃতির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে মহাযান এবং বজ্রযান নামের বৌদ্ধ ধর্মের দুটি শাখা থেকে। 1959 সালের তিব্বতের 14 তম দলাই লামার সাথে চীন সরকারের মতের পার্থক্য দেখা দিলে তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। পরে চীনের সরকার নিজেদের থেকেই সেখানে পাঞ্চেন লামা নামে দালাইলামার উত্তরাধিকারী হিসেবে একজনকে আসনে বসিয়ে দেয়। 

তিব্বতের এলে ইয়াকের নাম আসবে না এমনটা হয় না। ইয়াকের দুধ, ইরাকের মাংস এমনকি ইরাকের পশম থেকে তৈরি গরম কাপড় তিব্বতে নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া তিব্বতের মন্দিরগুলোতে ইরাকের দুধের তৈরি মাখনের গন্ধ সব সময় পাওয়া যায়। তাই বলতে পারেন ইয়াক তিব্বতের মানুষের জীবন যাত্রার 
বিশেষ মাধ্যম। 

পৃথিবীর 46 শতাংশ জনসংখ্যা কোন না কোনভাবে তিব্বতের থেকে উৎপন্ন অথবা তিব্বতের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর উপরে নির্ভর। তাই তিব্বতের ইংরেজিতে আরও একটা ছদ্ম নাম আছে, তার নাম থার্ড পোল। কারণ তিব্বতে প্রচুর পরিমাণ বরফ এবং জল দেখা যায়। 

পর্বতারোহীদের কাছে স্বর্গরাজ্যে এই পাহাড় পর্বত গুলোকে দেখতে সুন্দর লাগে বটে তবে জানেন কি সেই পাহাড় পর্বতের উঁচুতে উঠতে গেলে অক্সিজেন কমে যায়। এমনটা অনুভব হয় প্রত্যেকেরই। স্বাভাবিকের থেকে 40 শতাংশ অক্সিজেন কম থাকে তিব্বতের এইসব অঞ্চলে। তাই ঘুরতে গেলে শরীর সুস্থ রাখাটা দরকার। 

এই একবিংশ শতাব্দীতেও তিব্বতের মানুষ অদ্ভূত রীতিনীতির উপরে নির্ভর করে। তিব্বতে মানুষের মৃতদেহ কে কবর বা নষ্ট না করে সে দেহটাকে কোনো উঁচু পাহাড়ের উপর রেখে দেওয়া হয়। সেখানে শকুন বা কোন মাংস খাদক প্রাণী সেগুলো কি খেয়ে নেয়। এখানকার বৌদ্ধ ধর্মের মানুষের মধ্যে পুনর্জন্মের একটা বিশ্বাস আছে। তাছাড়া এমনিতে দেখতে গেলে পাহাড় পর্বতে ভরা অঞ্চলের কবর দেওয়ার জায়গা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই এখানকার মানুষ এই পদ্ধতি কে মেনে নিতে কোন অসুবিধা হয় নি। 

তিব্বতে পর্যটক গাড়ি গুলোর উপরে সরকার নজর রাখে। সেখানে ক্যামেরা লাগানো থাকে। তাই গাড়ি উল্লিখিত স্পিডের থেকে বেশি চললে অথবা সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কাজে কোন ভাবে লিপ্ত হলে রেডিওর মাধ্যমে সেখানে সাবধানতা দেওয়া হয়। এমনকি রাস্তায় কোথায় কেমন ভাবে চলতে হবে তারও নির্দেশ এই রেডিওর মাধ্যমে দেওয়া হয়ে থাকে। তাই সরকারের চোখে পর্যটকেরা সবসময় থাকে। 

আর তিব্বতে গেলে ঘোরার জায়গার অভাব তো হবেই না বরং বারেবারে আসার ইচ্ছেটা প্রত্যেকেই থাকবে। 

তো এই ছিলো তিব্বত সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পিরামিডের (Pyramids) অদ্ভুত রহস্য জেনে নিন

কোন মন্তব্য নেই
পিরামিডের অদ্ভুত রহস্য (Unknown Facts about Pyramids)

পিরামিডের অদ্ভুত রহস্য জেনে নিন

পৃথিবীতে মানব সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল প্রায় 10 হাজার বছর আগে। আর মানুষের বিজ্ঞানচেতনা জেগে ছিল আদিম যুগে আগুন আবিষ্কারের মাধ্যমে। সভ্যতার সাথে সাথেই মানুষের বিজ্ঞান ভাবনার বিকাশ ঘটে। পাহাড়ের গুহায় চিত্র অংকন, বড় বড় পাথর খন্ড কেটে মূর্তি বানানো এসব ছিল বিজ্ঞান চেতনার প্রমাণ। কিন্তু আজ থেকে 5000 বছর আগে মিসরে কিছু এমন স্থাপত্য নির্মাণ হয়েছিল যা তৎকালীন বিজ্ঞান ভাবনার ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব। কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া নিখুঁত এবং নির্ভুল পরিমাপ অকল্পনীয় স্থাপত্য নির্মাণ করেছিল তারা। আজ যেখানে 20 টনের একটি কংক্রিটের ভার তুলতে ক্রেনের দরকার হয়, সেখানে 5 হাজার বছর আগে কোন ক্রেন ছাড়া 70 টনের চেয়েও ভারী ভারী পাথর এরা বহন করেছিল। কিভাবে সম্ভব? এমনকি তারা আবিষ্কার করেছিল ন্যাচারাল এ.সি, যা পিরামিডের ভিতর সব সময় 20 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বজায় থাকত। 

প্রাচীনকালে মিশরীয় রাজাদের ফিরাউন বলা হতো। এই ফিরাউন রা যখন মারা যেতেন তখন একটি বিশেষ পদ্ধতিতে তাদের মৃতদেহ সংরক্ষিত করে রাখা হতো, একে মমি বলা হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো বর্তমানকালে একটি মৃতজীব কে সংরক্ষণ করতে গেলে ফরমালিন ও কিছু রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সেই সংরক্ষণ অল্প সময়ের জন্য সম্ভব। মিশরীয় রা এমনকি ব্যবহার করেছিল যা 4 হাজার বছর পরেও মমি গুলোকে অক্ষত রেখেছে? কোথা থেকে পেল তারা এই জ্ঞান? আমাদের প্রিয় জন বা কাছের মানুষ মারা গেলে আমরা তার স্মৃতিতে সমাধি বা কবর  নির্মাণ করি। মিশরীয় রা ফিরাউন দের মমি গুলো যে সমাধির মধ্যে রাখতেন তাই হলো পিরামিড। পিরামিড পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তমাশ্চর্যের একটি প্রাচীন মিশর শাসন করতেন প্রাচীন মিশরীয় রাজাদের বলা হতো। মিশরের ছোট-বড় 75 পিরামিড আছে।

কিন্তু এই পিরামিডের গঠন এতটাই আশ্চর্য যে বিজ্ঞানী দের বারে বারে ভাবিয়ে তুলছে একেকটি পিরামিড তৈরি করতে প্রায় 32 হাজার লাইম স্টোন ব্যবহার করা হয়েছিল। যার প্রত্যেকটি নিখুঁতভাবে কাটা। বিজ্ঞানীরা অনেক খোঁজ করেও পিরামিডের কাছাকাছি কোন  স্টোর ভান্ডার খুঁজে পায়নি। তো এতো ভারী ভারী স্টোন গুলি তারা কোথা থেকে নিয়ে আসত? আর কিভাবে তারা 50 থেকে 60 মিটার উচু পিরামিডগুলো তে এই ভারী ভারী পাথর গুলো তুলতো? 

কোন প্রাণী না কোন এলিয়েন? 

কাদের সাহায্য নিয়েছিল মিশরীয় রা? 

মিশরীয় রা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করতো। তাই রাজার মমির সাথে  তারা সোনাদানা, অমূল্য রত্ন ও দাস দাসীদের জীবন্ত কবর দিত পিরামিডে।

মরুভূমির দেশ মিশরে তাপমাত্রা সবসময় বেশি থাকত। কিন্তু তারা পিরামিডের ভিতরে এমন কিছু কারুকার্য করেছিল যাতে পিরামিডের ভিতরে সব সময় 20 ডিগ্রি তাপমাত্রা বজায় থাকত। কোন জিনিস দিলে তা আয়তনে বাড়ে আবার রাত কামালে তা আয়তনে ছোট হয়ে যায়। এটাকে আটকানোর জন্য বর্তমান বিজ্ঞানিরা একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তাকে বলা হয় বল & সকেট প্রসেস। 

আশ্চর্যের বিষয় হল চার হাজার বছর আগে মিশরীয়রা এই পদ্ধতি ব্যবহার করত পিরামিডে। যেখানে দিনের বেলায় 50 ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকত এবং রাতের বেলা 10 ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতো। অবাক হচ্ছেন তো! এখানেই শেষ নয় পিরামিডের অবস্থান আকাশের তারার সাথে সমান্তরাল। যা কোনোভাবেই কাকতালীয় হতে পারে না। আকাশে তারার সাথে সমান্তরালভাবে পিরামিড তৈরি করতে গেলে দরকার ছিল হাওয়াই জাহাজের। কিন্তু তখন কার  দিনে তারা হাওয়াই জাহাজে পাবে কি করে? আর হাওয়াই জাহাজ ছাড়া এই সমান্তরালভাবে পিরামিড নির্মাণ ছিল অসম্ভব। কিছু বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে এলিয়েন রা মিশরীয় দের সাহায্য করেছিল। এই পিরামিড গুলি তৈরি করতে তারা এই সমস্ত তারাগুলো থেকেই এসেছিল। এই যুক্তির পিছনে কারণ হলো মিশরের পিরামিডের ভিতরের দেয়ালে যে চিত্র অংকন হয়েছে সেখানে কিছু এলিয়েন যানের চিত্র দেখা গেছে। আর কিছু এলিয়েনের ছবি মিশরীয়রা একে ছিল এই পিরামিডে। 

তবে কি প্রাচীনকালে পৃথিবীতে এসেছিল? আর,মিশরীয় দের সাহায্য করেছিল? কারণ আমরা জানি যে আমাদের চোখের সামনে চারপাশে যে জিনিস দেখি সেই জিনিস দিয়ে নতুন কোন জিনিসের ভাবনা আমরা পাই। মিশরীয় রা হয়তো এরকম কোন যান দেখেছিল, এরকম কোন এলিয়েনদের দেখেছিল। তাই জন্যই তারা পিরামিডের দেওয়ালে এমন ছবি অংকন করেছিল। পিরামিডের সামনে একটি বিরাট দেখা যায়। যা বহু বছর ধরে মাটির নিচে চাপা পড়েছিল। এই বিশাল মূর্তিটি কোন আলাদা আলাদা পাথর দিয়ে তৈরি নয়, বরং একটা বিশাল পাথর খন্ড কেটে এটা তৈরি। 

প্রশ্ন হলো এই বিশাল মরুভূমিতে এই মূর্তি কিভাবে এলো? এটির মুখ মানুষের মতো কিন্তু শরীর পশু। 
একুশে জুলাই পৃথিবীতে সবথেকে বড় দিন হয়। এই দিন সূর্যকে মূর্তির পেছনে ঠিক অর্ধচন্দ্রাকার দেখায়। 

এই মূর্তির নিচেও রয়েছে কিছু সুরঙ্গ। যার শেষ প্রান্ত পিরামিডে পৌঁছে গেছে। কিন্তু পিরামিডের যে ঘরে এই সুরঙ্গ পৌঁছেছে সেখানে কিছুই পাওয়া যায় নি। 

পিরামিডের ভিতরে আজ পর্যন্ত যে কটা ঘর খুঁজে পাওয়া গেছে সবকটাই রহস্যময়। প্রতিটা ঘরের সাথে রয়েছে কিছু সুরঙ্গ।

 আপনি যদি ভাবেন নিশ্চয় হাওয়া চলাচল করার জন্য এই সুরঙ্গ গুলি বানানো হয়েছিল তাহলে আপনি ভুল। কারণ এই সুরঙ্গ গুলির প্রতিটা মুখ বন্ধ রয়েছে। যেন কেউ চায় না যে পিরামিডের ভিতরে ঘর গুলোতে কেউ প্রবেশ করুক। মাত্র 2 /3  টি ঘর আবিষ্কার করার পরেই বিজ্ঞানীদের সাথে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতে থাকে। কয়েকজন বিজ্ঞানীর আকস্মিক মৃত্যু হয়। তারপর মিশরের সরকার পিরামিডের ভেতরে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে ব্যান করে দিয়েছে। 

এসবের ভিতরে বিজ্ঞানীরা আরেকটি জিনিস খুঁজে পেয়েছিল যা হলো মিশরের আবিষ্কার লাইট। একটা দেয়ালে এমন চিত্র দেখা গেছে যেটা দেখে বোঝা যাচ্ছে এটি একটি কৃত্রিম লাইটের ছবি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন রাতের অন্ধকারে অবিরাম কাজ চালিয়ে যেতে তারা এই লাইট ব্যবহার করত। কিন্তু কোথা থেকে এলো এই লাইট? এলিয়েন নাকি ভবিষ্যতের কোনো মানুষ এদেশে এদের এই লাইট দিয়েছে তা এখনো অজানা। মিশর প্রায় 5000 বছর ধরে তাঁর বুকে জমা রেখেছে এমন কিছু রহস্যের ভান্ডার। 

মিশরের সবচেয়ে বড় এবং আকর্ষনীয় পিরামিড হচ্ছে গিজার পিরামিড। যা খুফু'র পিরামিড হিসেবেও পরিচিত। এটি তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব প্রায় 5000 বছর আগে। এর উচ্চতা প্রায় 481 ফুট।

এটি 755 বর্গফুট জমির উপর স্থাপিত এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় 20 বছর এবং শ্রমিক কাজ করে ছিল আনুমানিক 1 লাখ।

পিরামিডটি তৈরি করা হয়েছিল বিশাল বিশাল পাথর খন্ড দিয়ে। পাথর খণ্ডের একেকটির ওজন ছিল প্রায় 60 টন। যার দৈর্ঘ্য ছিল 30 থেকে 40 ফুটের মতো।

তো এই ছিলো পিরামিডের পিছনে লুকিয়ে থাকা কিছু রহস্য।। 

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মোগল সাম্রাজ্যের নিদর্শন লালকেল্লা (Red Fort) সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত তথ্য জেনে নিন

কোন মন্তব্য নেই
লালকেল্লা সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য
মোগল সাম্রাজ্যের নিদর্শন লালকেল্লা (Red Fort) সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত তথ্য জেনে নিন

লালকেল্লা নির্মাতা শাহজাহান তার শেষ দিনটি কাটিয়েছিলেন গৃহবন্দী হয়ে। তার ছেলে ঔরঙ্গজেব তাকে বন্দী করে রেখেছিলেন এই কেল্লায়। এমনকি মুঘল সাম্রাজ্যের শেষ রাজা দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ এই কেল্লা তেই বন্ধী ছিলেন ব্রিটিশদের হাতে। আগ্রা থেকে লালকেল্লায় চলে আসার পর থেকেই ভাঙন ধরে মোগল সাম্রাজ্যের। কেন লালকেল্লা আজও অভিশপ্ত? 100 বছর আগে কেমন ছিল লালকেল্লা? তো চলুন জেনে নিই লাল কেল্লার সাথে জড়িত কিছু ইতিহাস। 


লালকেল্লা আসলে সাদা প্রাসাদ । হ্যাঁ! আপনি ঠিকই পড়েছেন। শাহজাহান 1648 সালে লালকেল্লা যখন তৈরি করেছিলেন তখন এটি সম্পূর্ণ সাদা পাথরের তৈরি ছিল। যা দূর থেকে দেখতে স্বর্গের মতো লাগতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই সাদা পাথর গুলো লালচে হয়ে যায়। তাই পরবর্তীকালে ব্রিটিশ সরকার এটিকে লাল রং করে দেয় এবং তারপর থেকেই এটি লালকেল্লা নামে পরিচিত হয়। 

শাহজাহান যখন লাল কেল্লা নির্মাণ করেন তখন এটির নাম লালকেল্লা ছিলনা। এর নাম ছিল কিলাই মোবারক, যার অর্থ আশীর্বাদের দান। আগ্রার প্রচন্ড গরম সহ্য করতে পারতেন না সম্রাট শাহজাহান। তাই তিনি তার রাজধানী আগ্রা থেকে দিল্লীতে স্থানান্তর করেন। 1639 সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় 250 একর জমিতে গড়ে তোলা হয় লালকেল্লা। তখনকার দিনে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় এই কেল্লা নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে প্রায় 10 বছর সময় লাগে এবং এই কাজ করেছিলেন মোগল সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ দুই নির্মাতা ওস্তাদ হামিদ এবং ওস্তাদ আহমেদ। 


বিশাল মোগল সাম্রাজ্যের সম্রাট শাহজাহানের বাসস্থান সুরক্ষিত এবং শত্রুপক্ষের হাত থেকে বাঁচাতে এর দেয়াল ছিল আকাশছোঁয়া উঁচু এবং এটি সম্পূর্ণভাবে অভেদ্য। ভিতরে প্রায় শতাধিক গুপ্ত দরজা। অনেকে বলেন এই লাল কেল্লার ভিতরে একটি গুপ্ত সুড়ঙ্গ আছে। যার সোজা চলে গেছে তাজমহলের ভিতরে। সম্রাট শাহজাহান তার শেষ জীবনে বেশ কয়েকবার এই সুরঙ্গ দিয়ে তাজমহলে মমতাজের সমাধির পাশে সময় কাটিয়েছেন। পরবর্তীকালে ছেলে ঔরঙ্গজেব তাকে গৃহবন্দি করে রাখলে এই লালকেল্লার যে ঘর থেকে তাজমহল দেখা যায় সেই ঘরে তাকে রাখার অনুরোধ করেন। কিন্তু ক্ষমতার লোভে অন্ধ ঔরঙ্গজেব তার এই অনুরোধ খারিজ করে দেয়। 

আপনি জানলে অবাক হবেন পৃথিবীর সবচেয়ে দামি হিরে কোহিনূর এই লাল কেল্লার একটি অংশ। শাহজাহান তার শাসনকালের এটিকে মোগল সাম্রাজ্যের সম্পত্তি বানান। সোনার তৈরি ময়ূর সিংহাসনের চূড়ায় এই কোহিনূর হিরে ব্যবহার করতেন সম্রাট। পরবর্তীকালে দুর্ধর্ষ লুটপাটকারী নাদির শাহ এই কোহিনূর হীরে ছিনিয়ে নেয় মুঘলদের কাছ থেকে। সেখান থেকে হাত বদল হয়ে কোহিনূর হীরে পৌঁছায় ব্রিটিশদের কাছে। বর্তমানে রানী এলিজাবেথের রাজমুকুটে এই হীরে ব্যবহার করা হয়। এই কেল্লার কারুকার্যের জন্য এটি আজও আমাদের মন জয় করে। শাহজাহান তার একান্ত আমোদ-প্রমোদের জন্য এর ভেতরে একটি রং মহল নির্মাণ করেছিলেন। এই রং মহলে শুধুমাত্র তার রানীরা প্রবেশ করতে পারতেন। মাঝেমধ্যে এখানে নাচ-গানের আসর বসত। পরবর্তীকালে ওরঙ্গজেব সমস্ত নর্তকীদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। মোগল সাম্রাজ্যের ভারতবর্ষে বিশাল। বর্তমানকালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ছিল ভারতবর্ষের অভিন্ন অংশ। লাল কেল্লার মুখ্য দরজা ছিলো পাকিস্তানের দিকে। তাই এর নাম লাহোর গেট। বিশাল এই লাল কেল্লা অষ্টভূজ আকৃতির তৈরি। আমরা যেসব বাড়ি বা স্থাপত্য দেখি তার বেশিরভাগই চার কোনা আকৃতির হয়। কিন্তু এই লালকেল্লা সম্পূর্ণভাবে আটকোনা ধাচে তৈরি, যা একটি অকল্পনীয় নিদর্শন। 

এটি ভারতীয় ইতিহাস এবং সংস্কৃতির একটি অংশ হওয়ায় 2007 সালে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষিত করা হয়। ঔরঙ্গজেবের হাতে বন্দি থাকা অবস্থায় শাহজাহানের লালকেল্লা থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ধরা পড়ে যান শয়তান ওরঙ্গজেব এর হাতে। এরপর আরো কঠোর নজরদারি রাখা হয় তার উপর। যে অভেদ্য লালকেল্লা বানিয়েছিলেন শত্রুপক্ষের হাত থেকে বাঁচতে সেই লালকেল্লাতেই বন্দি পড়ে গেছেন নিজের ছেলের হাতে। শেষ মুহূর্ত খুবই কষ্টে কাটিয়েছিলেন শাহজাহান। বিশাল ঐশ্বর্যের মালিক হয়েও দিন কাটাতে হয়েছিল গৃহবন্দি হয়ে। মমতাজের সমাধি দেখার জন্য ছটফট করতেন শাহজাহান। কিন্তু উপায় ছিল না। মেয়ে জাহানারা লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে নিয়ে যেতেন দূর থেকে তাজমহল দেখাতে। 


ধনসম্পত্তি মোহমায়ায় নিজের সন্তানদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারেননি শাহজাহান। তার মৃত্যুর প্রায় একশ থেকে দেড়শ বছর পর লালকেল্লা ব্রিটিশ সরকারের হাতে চলে যায়। লালকেল্লা কে তারা শাসন ব্যবস্থার প্রধান প্রাসাদ বানায়। ব্রিটিশ রা ভারত ছেড়ে গেলে এই লাল কেল্লা কে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন। প্রতিবছর 15 ই আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর এখান থেকে পতাকা উত্তোলন করেন।

তো এই ছিলো মোগল দের তৈরি করা লাল কেল্লা সম্পর্কে কিছু তথ্য।। 

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আইফেল টাওয়ার (Eiffel Tower) সম্পর্কে কিছু গোপন তথ্য জেনে নিন

1 টি মন্তব্য
আইফেল টাওয়ার সম্পর্কে কিছু গোপন তথ্য

আইফেল টাওয়ার সম্পর্কে কিছু গোপন তথ্য জেনে নিন

ভ্রমণবিলাসী মানুষের কাছে প্রিয়তম জায়গাগুলোর মধ্যে একটি হলো প্যারিস শহর। অনেকেই তাই মনে করেন খুব ভাগ্যবান মানুষ হলে নাকি প্যারিস শহরে কেউ যেতে পারে। কিন্তু প্যারিসের বিখ্যাত হওয়ার পিছনে যে কথাটি জড়িত আছে তা হলো আইফেল টাওয়ার। আইফেল টাওয়ার প্যারিস শহরের চ্যাম্প ডে মাস শহরে অবস্থিত। 

সাধারণত আইফেল টাওয়ারের নির্মাণে কৃতিত্ব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার গুসতাভে আইফেল কে দেওয়া হয়। কিন্তু আসলে মরিস কোচলিন এবং এমিলে নৌগুয়ের কে এই টাওয়ার নির্মাণের সৃষ্টিকর্তা বলা হয়ে থাকে। টাওয়ার টি 1889 সালে বিশ্ব মেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের সময় এটিকে সাময়িক গঠন হিসাবে তৈরি করা হয় কিন্তু পরবর্তীকালে বেতার মাধ্যম ও পর্যবেক্ষণ টাওয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকলে ধ্বংসের চিন্তা বাতিল করা। তবে জানেন কি, পৃথিবীতে টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পরিদর্শনকারী স্থান গুলির মধ্যে আইফেল টাওয়ার সবথেকে বেশি পর্যটক আকৃষ্ট করে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক আইফেল টাওয়ার সম্পর্কে কিছু গোপন তথ্য যা হয়তো আপনার অজানা। 

গুস্তাভে আইফেল প্রথমে স্পেনে টাওয়ারটি নির্মাণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এত বিশাল নির্মাণকে অদ্ভুত ভেবে স্পেন সরকার প্রত্যাখ্যান করে দেন। পরবর্তীকালে প্যারিসে নির্মাণকার্য চলতে থাকলে স্থানীয় মানুষ এ বিশাল কালো রঙের নির্মাণকে অশুভ হলে বিরোধিতাও করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এই আইফেল টাওয়ার ফ্রান্সে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।


1889 সালে ফ্রেঞ্চ রেভ্যুলেশন এর শতবার্ষিকী উপলক্ষে একটি বিশ্ব মেলার আয়োজন করা হয় এবং তার প্রবেশদ্বার হিসেবে এই টাওয়ারটি নির্মাণ করা হয়। টাওয়ার টি প্রায় 10 হাজার টন ওজনের এবং পুরোটাই লোহা দিয়ে তৈরি। এই বিশাল লৌহ নির্মাণ কে মরিচার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রত্যেক সাত বছর অন্তর অন্তর পঞ্চাশটি টন রং করা হয় এবং এই রং পুরোপুরি স্থানীয় সংস্কৃতি রীতি মেনে হয় এবং তা হাতেই করা হয়। এখনো পর্যন্ত 18 বার রং করা হয়েছে।


1940 সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন জার্মানি প্যারিস শহর দখল করে নেয় তখন ফ্রান্সের মানুষ আইফেল টাওয়ারের লিফটের কেবেল টা কেটে দেন। যাতে হিটলারের সেনা তাদের নাজি পতাকা আইফেল টাওয়ারের উপরে না লাগাতে পারে। 


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শেষ কালে যখন জার্মানি যুদ্ধের হারার মুখে এসে দাঁড়ায় তখন এডলফ হিটলার আইফেল টাওয়ার সহ প্যারিস শহরের সমস্ত কিছু ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। কিন্তু হিটলারের এক সেনানায়ক তার আদেশ অগ্রাহ্য করেন এবং তার ফলস্বরূপ টাওয়ারটি আজ ফ্রান্সের ঐতিহ্য দাঁড়িয়ে আছে। এই বিশাল নির্মাণ টি যদি উপরে উঠে উপভোগ করতে চান তাহলে আপনাকে 1665 ধাপ সিড়ি চেপে উঠতে হবে। প্রথম এবং দ্বিতীয় তলা লিফট এবং সিড়ি দুইভাবেই যাওয়া যায়, কিন্তু তৃতীয় তলা উঠতে লিফটের ব্যবহার করতেই হবে। প্রথম তলাতে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এবং বসার স্থান তৈরি করা আছে। যেখান থেকে পর্যটকরা প্যারিস শহরের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। 

 বিবাহ একজন পুরুষ ও নারীর মধ্যে হয়ে থাকে এটাই আমরা জানি। কিন্তু লৌহ স্তম্ভের সঙ্গে বিবাহের ঘটনা একটু অদ্ভুতই বটে। এই অদ্ভূত ঘটনাটি ঘটে 2007 সালে। যখন একজন মহিলা নিজের দাম্পত্য জীবনের থেকে বিরক্ত হয়ে যান এবং আইফেল টাওয়ারের সঙ্গে বিবাহ করে নেন । পরবর্তীকালে এই মহিলা নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন এরিকা লা টুর আইফেল। 

প্যারিস শহরের এই ঐতিহ্য শালী জিনিসটিকে সাজাতে প্রায় কুড়ি হাজার বাল্ব এর প্রয়োজন হয়। আপনারা আরো একটি ঘটনা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন যে গরমকালে রেল লাইনের মতো আইফেল টাওয়ারের চড়াও 6 ইঞ্চির মত বেড়ে যায় এবং সূর্যাস্তের পর চওড়া কিছুটা কমে যায়। এই অদ্ভূত ঘটনাটি স্থানীয় মানুষের কাছে আগে আশ্চর্য মনে হল এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আইফেল টাওয়ারে জনপ্রিয়তা এত বেশি যে পৃথিবীতে এই আইফেল টাওয়ারের ত্রিশটিরও বেশি রেপ্লিকা দেখা যায়। 

এত সুন্দর এবং অবাক করা নিদর্শনের রাত্রে ফটো তোলা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে ধরা হয়। কারণ সেখানকার সরকার টাওয়ারের আলোকসজ্জা টিকে নিজস্ব কপিরাইট হিসেবে মনে করেন। এই রকম অনেক অবাক করে দেওয়ার ঘটনা আইফেল টাওয়ার এর সঙ্গে যুক্ত আছে যা সত্যিই আপনাকে অবাক করে দিতে যথেষ্ট।

পৃথিবীর বেশ কিছু দেশ যেমন জাপান, আমেরিকা এরা নিজেদের জনবহুল শহর গুলোতে এই রেপ্লিকা গুলি তৈরি করেছে। যা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আইফেল টাওয়ারের নির্মাণকারী গুস্তাভে আইফেল টাওয়ারের এক হাজার ফুট উপরে তৃতীয় তলায় নিজের জন্য একটি প্রাইভেট ঘর তৈরি করেন। এই ঘরটির সমস্ত বিখ্যাত মানুষের নিয়মিত যাতায়াতের জায়গা ছিল। তাই  এইসব বিখ্যাত মানুষের আবিষ্কারের নিদর্শন বর্তমান পর্যটকরা ঘরটি পরিদর্শনের সময় দেখতে পারেন।

ইংল্যান্ড সরকার এই বিশাল টাওয়ারের ঐতিহ্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নিজের দেশে আইফেল টাওয়ারের চেয়েও উঁচু একটি টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা 1891 সালে লন্ডনে শুরু করেন। কিন্তু টাওয়ারের ভিতের অস্থিরতা দেখে 1907 সালে সেটিকে ধ্বংস করে ফেলা হয়। 

ভিক্টর লাস্টিগ নামে একজন ব্যাক্তি এক লোহা ব্যবসায়ীকে আইফেল টাওয়ার বিক্রি করে দেন। 
ঘটনা টি অবাক মনে হল একদম সত্যি ঘটনা। ভিক্টর এক লোহা ব্যবসায়ীকে টাওয়ারটি কে নিজের বলে প্রমাণ করে দেন। কিন্তু ব্যবসায়ী লোকসমাজে বদনামের ভয়ে কোন জায়গায় অভিযোগ করেননি।




তো এই ছিলো নিদর্শনের প্রতীক আইফেল টাওয়ার সম্পর্কে কিছু  তথ্য। 

1 টি মন্তব্য :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

বিশ্বের সবচেয়ে দামি বিলাসবহুল এবং অদ্ভূত গাড়ির সম্পর্কে জেনে নিন

কোন মন্তব্য নেই
বিশ্বের সবচেয়ে দামি বিলাসবহুল এবং অদ্ভূত গাড়ি 

বিশ্বের সবচেয়ে দামি বিলাসবহুল এবং অদ্ভূত গাড়ির সম্পর্কে জেনে নিন

আমাদের মধ্যে অনেকেরই গাড়ির খুব শখ থাকে। আর ধনী মানুষদের তো অনেক গাড়ির কালেকশন থাকে। যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করে। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু গাড়ি আছে যা খুবই চমৎকার এবং বিচিত্রময়। এইসব গাড়ি বানানো হয় শুধুমাত্র মানুষের শখ মেটানোর জন্য। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের কিছু দামি বিলাসবহুল এবং অদ্ভূত গাড়ির সম্পর্কে ।

রিনস্প্রিড স্কুবা কার: এই গাড়িটি দেখলে অনেকের জেমস বন্ডের গাড়ি কথা হয়তো মনে পড়তে পারে। কারণ এই গাড়িটি মাটির সাথে সাথে জলেও চলতে পারে। পৃথিবীর এটিই প্রথম গাড়ি যা কিনা জলের নিচে চলতে পারে। মাটিতে এর গতি থাকে 120 কিলোমিটার পার ঘন্টা আর জলে থাকে 6 কিলোমিটার। এই গাড়িটি একটি ইলেকট্রিক গাড়ি। যার কারণে এটিকে চার্জ করতে হয়। এটি দেখতে এতো সুন্দর যে, যেকেউ এই গাড়িটি পছন্দ করবে। আপনি যদি সমুদ্রের নিচে ড্রাইভিং করতে চান কিন্তু সাঁতার পারেন না তবে এই গাড়িটি আপনার কাজে আসবে। 

ফেরারি মডোলু 512এস: এই গাড়িটির 1968 সালে তৈরি করা হয়েছিল। ওই সময় এই গাড়িটি খুব বেশি সাড়া ফেলেছিল। এর ডিজাইন খুবই সুন্দর। যার কারনে আজও যদি কেউ এটি নিয়ে বের হয় তবে সবার এর দিকে তাকিয়ে থাকবে। এর ডিজাইন এর কারণ এটি 350 কিলোমিটার পর্যন্ত গতি অর্জন করতে পারে। 550 হর্সপাওয়ারের এই গাড়িটি কে ওই সময় ফিউচার কার বলা হত। 

বিএমডব্লিও 4219 ইএলআই: এলি নামের এক বাচ্চা একদিন একটি আবদার করে বসে। যে তার এমন একটি গাড়ি লাগবে যেখানে তার সব খেলনা নেওয়া যাবে। আর তার কারণে জন্ম হয় এই গাড়িটির। আপনি জানলে অবাক হবেন এর ডিজাইন চার বছরের এই বাচ্চাটি ই করেছে। এটিকে এমন ভাবে বানানো হয়েছে যেখানে 42 টাকা থাকবে। এই গাড়িটি তে তিনটি স্টিয়ারিং থাকে যার মাধ্যমে তিনজন মিলে অথবা একজনের পর একজন চালাতে পারবে এই গাড়িটি। এই গাড়ি যখন রাস্তায় নামে তখন কেউই এর থেকে চোখ ফেরাতে পারে না। 

ফ্ল্যাট মোবাইল কার: অনেক মানুষ মাটির কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে। তো এমন সব মানুষদের জন্যই এই গাড়িটি। যা অনেক খাটো। আর এই গাড়িটি মাটির খুব কাছাকাছি। কারণ এই গাড়িটি এতটাই ফ্ল্যাট যে এটি প্রায় মাটির সাথে মিশে আছে। মাত্র 19 ইঞ্চি উচ্চতায় থাকা এই গাড়িটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে। 1875cc এই গাড়িতে জেট ইঞ্জিনের ব্যবহার করা হয়েছে। যার মাধ্যমে 150 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় বেগে গাড়িটি চলতে পারে। 


ব্যাটম্যান গমবেল 3000: যদি আপনি ব্যাটম্যানের ফ্যান হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই গাড়িটিকে বেশ পছন্দ করবেন। এর আকর্ষণীয় লুক সবার নজর কাড়তে সক্ষম। যারা গতি ভালোবাসেন তাদের জন্য এই গাড়িটি আজ থেকে ড্রিম কার হয়ে থাকবে। কারণ এর গতি 350 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। আর এর ওজন প্রায় 2.5 টন। যদি আপনি অনেক ধনী হয়ে থাকেন তবে এটি আপনার বিলাসিতা পূরণ করবে। এটি সম্পূর্ণ কার্বন ফাইবার দ্বারা তৈরী। তাই যদি এর কোনো অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যায় তবে এটি টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। 

তো এই ছিলো কিছু দামি, বিলাসবহুল এবং অদ্ভুত গাড়ির নাম। 



কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

অ্যাপেল (Apple) কোম্পানি সম্পর্কে কিছু অজানা এবং মজার তথ্য জেনে নিন

কোন মন্তব্য নেই

অ্যাপেল কোম্পানি সম্পর্কে কিছু অজানা এবং মজার তথ্য (Unknown Facts about Apple)



অ্যাপেল (Apple) কোম্পানি সম্পর্কে কিছু অজানা এবং মজার তথ্য জেনে নিন

আজ আমরা আধুনিক প্রযুক্তির রাজপুত্র স্টিভ জবস্ এর হাত ধরে চলা শুরু অ্যাপেল কোম্পানি সম্পর্কে কিছু অজানা এবং মজাদার তথ্য জানবো । অ্যাপেল ব্র্যান্ড টি আমাদের সকলেরই পছন্দের একটি ব্র্যান্ড। 

একটি আইফোন তৈরিতে মোট 75 টির বেশি পদার্থ ব্যবহার হয়। যা পর্যায় সারণিতে উল্লিখিত মৌলিক পদার্থগুলোর এক-তৃতীয়াংশ। এর মধ্যে রয়েছে সোনা রুপা এমনকি প্লাটিনামও।

অ্যাপেল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনেক সময় পর্যন্ত স্টিভ জবসের মাত্র 1 ডলার বেতন নিতেন তিনি মনে করেন টাকা নিয়ে ব্যাংকে ফেলে রাখার চেয়ে কোম্পানির মূলধন হিসেবে রেখে দিলে বরং অনেক ভালো হবে।

অ্যাপেল কোম্পানির প্রতি মিনিটে ইনকাম তিন লক্ষ মার্কিন ডলার বা 25 কোটি 46 লাখ টাকারও বেশি যেখানে গুগলের ইনকাম মাত্র দুই লাখ মার্কিন ডলার বা 16 কোটি 97 লাখ টাকা তাহলে বুঝতেই পারছেন অ্যাপেল কোম্পানির ইনকাম গুগলের থেকে অনেক বেশি। 

2011 সালে অ্যাপেল কোম্পানির নগদ টাকা আমেরিকান সরকারকেও ছাড়িয়ে যায়। আপনি যদি অ্যাপেলের মূলধনকে পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিতে চান তাহলে পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ প্রায় 100 ডলার বা সাত হাজার টাকা করে পাবে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক অবস্থায় অনেক অর্থ সংকটে পড়েছিল। যার ফলে স্টিভ জবস তার গাড়ি বিক্রি করে দেন এবং আরেকজন সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওয়াজনিয়াক তার ক্যালকুলেটর বিক্রি করে দেয়। 

অ্যাপেল সম্পর্কিত একটি মজার তথ্য দিই, আপনি যত জায়গাতে অ্যাপেল ফোনের প্রমোশনাল কোন ছবি দেখতে পাবেন প্রত্যেকটি ছবিতেই আই ফোনের স্ক্রিনে সময়টা পাবেন 09:41 মিনিট। এর কারণটি জানতে চান? এর কারণ হচ্ছে যখন স্টিভ জবস প্রথমবার আইফোন কে সবার সামনে উপস্থাপন করেছিলেন তখন সময়টা ছিল 09:41 মিনিট। সেজন্যই স্টিভ জবস চেয়েছিলেন সব জায়গাতেই প্রমোশনের ক্ষেত্রে যেন আই ফোনের স্ক্রিনে সেই সময়টা ব্যবহার করা হয়। যে নিয়ম এখনো পালন করা হয় এবং ভবিষ্যতেও হবে।

যখন স্টিভ জবস আইফোন টি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দেখাচ্ছিলো তখন তার ডিসপ্লে ছিলো প্লাস্টিকের।তখন স্টিভ জবস লক্ষ্য করলো এর কিছুক্ষণ পরেই উপরে দাগ পড়ে যাচ্ছে। তখন স্টিভ তার দলকে বলেছিল যে মার্কেটে যাওয়ার আগেই যেন স্ক্রিনটি প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাচের করে দেয়া হয় আর তখন থেকেই মূলত গরিলা গ্লাসের উদ্ভাবন হয়।

অ্যাপেলের প্রথম ফোনটি যখন স্টিভ জবসের হাতে দেয়া হয় তখন স্টিভ জবসের এটিকে নিয়ে একুরিয়ামের ভেতরে ফেলে দেয় এবং সে দেখতে পায় এর ভেতর থেকে বাতাসের বুদবুদ বের হচ্ছে এবং সে বুঝতে পারে এর ভিতর অবশ্যই কোন না কোন জায়গা ফাঁকা রয়েছে আর সে তার টিম মেম্বার দের বলেছিল এই ফাঁকা জায়গা গুলি পূরণ করে ফোনটি কে যেনো আরো ছোটো করা হয়। 

আপনারা পড়ছেন অ্যাপেল কোম্পানি সম্পর্কে কিছু তথ্য

অ্যাপেলের ম্যাক বুকের কিবোর্ড কমান্ড নামের যে বাটন টি রয়েছে সেটিতে একটি স্পেশাল চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। আপনি জেনে অবাক হবেন যে এই চিহ্ন টি সুইডেনের একটি রাস্তার চিহ্ন। যার অর্থ হচ্ছে মজার জায়গা। 

অ্যাপেল স্মার্টওয়াচের ডিসপ্লে তে যে  অ্যানিমেটেড ফ্লাওয়ার গুলো দেখানো হয় সেগুলো মূলত বাস্তব ফুল কোনো অ্যানিমেটেড ফুল নয়। বাস্তব ফুলের কলি থেকে ফুল হয়ে ওঠে দৃশ্য গুলিকে ওয়ালপেপার দেখানো হয়েছে। আর এজন্য অ্যাপেল কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে ক্যামেরা নিয়ে। 

 আপনি যদি অ্যাপেল এর প্রোডাক্ট নিয়ে ধূমপান করেন এবং কোনো প্রকার নিকোটিন যদি প্রোডাক্ট এর মধ্যে প্রবেশ করে আর এমন কোনো প্রমাণ যদি অ্যাপেল পেয়ে থাকে তাহলে আপনার প্রোডাক্টের ওয়ারেন্টি বাতিল হয়ে যাবে। 

অ্যাপেল কোম্পানির প্রাইভেসি পলিসিতে একটি অধ্যায় আছে যেখানে বলা হয়েছে আপনি তাদের পণ্য কোন অস্র তৈরি কিংবা কোন পরীক্ষার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না। এরকম যদি করেন তাহলে আপনার ডিভাইসটিকে যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে তার জন্য ওয়ারেন্টি নাও পেতে পারেন।

অ্যাপেল তাদের পণ্যগুলোকে কখনোই জাহাজে পরিবহন করে না। যদিও জাহাজে পরিবহন করা বিমানের চেয়ে অনেক সস্তা। তারা বিমানে তাদের পণ্যগুলোকে কেন পরিবহন করে? এর কারণ হিসেবে তারা মনে করে প্রোডাক্টের গুণগতমান, নিরাপত্তা এবং পরিবহন সময় কমিয়ে নিয়ে আসা। 

আপনি নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে প্রায় সবসময় স্টিভ জবস একইরকম কলার বিশিষ্ট জামা পরতেন। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান জাপানি কোম্পানি সনি থেকে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

মৃত্যুর কিছুদিন আগেই স্টিভ জবসের ক্যান্সার ধরা পড়ে। অ্যাপেলের বর্তমান সিইও টিম কুক খেয়াল করলেন তার নিজের রক্তের গ্রুপ এবং স্টিভ জবসের রক্তের গ্রুপ একই। সেজন্য তিনি স্টিভ জবস কে তিনি তার নিজের লিভার ডোনেট করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু স্টিভ সেটা প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার কিছুদিন পরেই মারা যান। এটি মূলত স্টিভ জবসের মহানুভবতার একটি নজির। 


এই ছিলো অ্যাপেল সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।।





কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন