আর্জেন্টিনা দেশের রাজধানীর নাম কি?

হ্যালো বন্ধুরা! আমরা অনেকেই আর্জেন্টিনা দেশ সম্পর্কে কিছু না কিছু তথ্য অবশ্যই জানি। আমরা এই সাইটে আর্জেন্টিনা দেশ সম্পর্কে বিভিন্ন অজানা তথ্য ইতিমধ্যেই পাবলিশ করেছি। তবে এই প্রতিবেদনে আমরা জানবো আর্জেন্টিনা দেশের রাজধানী সম্পর্কে তথ্য।

আর্জেন্টিনার রাজধানী শহর হল বুয়েনস আইরেস, যা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব তীরে রিও দে লা প্লাটা নদী বরাবর অবস্থিত। এই শহরের জনসংখ্যার আকার প্রায় 40 লক্ষ।  তবে একটি মেট্রোপলিটন শহর হিসেবে বুয়েনস আইরেসের জনসংখ্যা প্রায় 1 কোটি 71 লক্ষ, যা দেশের বৃহত্তম শহর।

বুয়েনস আইরেস

বুয়েনস আইরেস শহরটি তার উচ্চমানের জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত। উদাহরণস্বরূপ, বুয়েনস আইরেসের লোকজন দক্ষিণ আমেরিকায় সর্বোচ্চ পরিবারের আয়ের উৎস রয়েছে। উপরন্তু, এই রাজধানী শহর পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়, যারা বহুসংস্কৃতির দৃশ্য এবং ইউরোপীয়-প্রভাবিত স্থাপত্য দেখতে আসে। 

1536 সালে স্প্যানিশ অভিযাত্রীরা এই শহরটি প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত বর্তমান বুয়েনস আইরেস আদিবাসীদের দ্বারা অধ্যুষিত এলাকা ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘর রক্ষা করেছিল এবং 1542 সাল নাগাদ ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীদের এই অঞ্চল থেকে বের করে দিতে বাধ্য করেছিল। প্রায় 40 বছর পরে, স্প্যানিশ উপনিবেশকারীরা আবার ফিরে আসে এবং একটি বাণিজ্য পোস্ট প্রতিষ্ঠা করে। তৎকালীন ব্যবসায়ীরা অবশ্য অনুমোদিত ট্রেডিং রুটের জটিলতার কারণে দণ্ডিত হয়েছিল এবং 19 শতকের শেষের দিকে স্প্যানিশ মুকুট থেকে স্বাধীনতার ধারণা প্রচার করতে শুরু করেছিল।

1810 সালে, বুয়েনস আইরেস বর্তমান আর্জেন্টিনাকে আর্জেন্টিনার স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়, প্রায় ছয় বছর পর 1816 সালে তারা স্বাধীনতা লাভ করে। বুয়েনস আইরেস পরে 19 শতকের মাঝামাঝি সময়ে ফরাসি আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। 20 শতকের গোড়ার দিকে শহরের জনসংখ্যা বাড়তে শুরু করে, গ্রামীণ থেকে শহুরে অভিবাসনের সাথে সাথে সেখানকার লোকজন বুয়েনস আইরেসে এসে তার সফল শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ খুঁজতে থাকে। তখন থেকেই এই রাজধানী শহরটি আর্জেন্টিনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে রয়ে গেছে।

বিংশ শতকের মাঝামাঝি থেকে বুয়েনস আইরেস যখন গ্রামীণ থেকে শহুরে স্থানান্তর ধীর হয়ে যায় তখন থেকে শহরের বর্তমান জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে অপরিবর্তিত। এই সীমিত বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়েছে কম অভিবাসন সংখ্যা এবং শহরে গড় জন্মহারের চেয়ে কম। এই প্যাটার্নটি অন্যান্য বৃহত্তর মেট্রোপলিটন এলাকায় দেখা যায়নি। বুয়েনস আইরেসের জনগণের বয়সের কাঠামো ইউরোপ জুড়ে বেশিরভাগ শহুরে অঞ্চলের মতো। এই শহরের প্রায় এক-চতুর্থাংশ লোকের বয়স 60 বছরের বেশি, যেখানে মাত্র 17 শতাংশ 15 বছরের কম বয়সী। উপরন্তু, এখানকার অধিকাংশ লোকজন ঐতিহ্যবাহী বাড়ির পরিবর্তে অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে বাস করে।

রাজধানী শহরের কর্মশক্তির প্রায় 25 শতাংশ পরিষেবা খাতে নিযুক্ত। পর্যটন ও বাণিজ্য খাতে প্রায় 20 শতাংশ, আর্থিক পরিষেবা এবং ব্যবসায়িক খাতে 17 শতাংশ, উত্পাদন খাতে 10 শতাংশ এবং জনপ্রশাসনে 6 শতাংশ। শহরটিতে 2007 সালে 8.7 শতাংশ দারিদ্র্যের হার লক্ষ্য করা গিয়েছিল, যখন পুরো মেট্রোপলিটন এলাকায় 20.6 শতাংশ দারিদ্র্যের হার রিপোর্ট করা হয়েছে।

জাতিগতভাবে বুয়েনস আইরেসের বেশিরভাগ লোকজন ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত। কিছু সাধারণভাবে উদ্ধৃত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ইতালি, স্পেন, জার্মানি, স্কটল্যান্ড, সুইডেন, গ্রীস এবং পর্তুগাল। উপরন্তু, শহরটি দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম ইহুদি জনসংখ্যার আবাসস্থল।  প্রায় 250,000 জন ইহুদি জনগন এই শহরে বসবাস করে। চীনা অভিবাসীরা চতুর্থ বৃহত্তম অভিবাসী গোষ্ঠী যাদের মধ্যে অনেকেই 1980 এর দশকে তাইওয়ান থেকে এসেছিল। আনুমানিক 61,000 জন আদিবাসী বংশোদ্ভূত। এর মধ্যে, কেচুয়া এবং গুয়ারানি জনগণের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। 

তো এই ছিল আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেস সম্পর্কে তথ্য।।