Knowledge is Power 😎

ফোর্বস বিলিয়নিয়ার লিস্ট তৈরি করে কিভাবে? | Bengali Gossip 24

কোন মন্তব্য নেই

ফোর্বসের ধনী তালিকায় ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সদস্য এবং মধ্য প্রাচ্যের যুব রাজদের নাম থাকে না কেন ?

ফোর্বস বিলিয়নিয়ার লিস্ট তৈরি করে কিভাবে? | Bengali Gossip 24


পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের কথা বলতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই জেফ বেজোস,  বিল গেটস, মার্ক জুকারবার্গ এই নামগুলো প্রথমে আমাদের মাথায় আসে। ফোর্বস, বিজনেস ইনসাইডার বা ব্লুমবার্গ এইসব বিজনেস ম্যাগাজিন অনুসারে এই তালিকায় ঘুরেফিরে জেফ বেজোস, বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট এই নাম গুলোই আসে।

কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন এই তালিকা গুলোতে কোন শেখ বা সৌদি যুবরাজ কিংবা ব্রিটিশ রাজপরিবারের কোনো সদস্যদের দেখা যায় না কেন?

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ যেমন কুয়েত, সৌদি আরব, কাতার এই দেশগুলো বিভিন্ন ধন সম্পদে পরিপূর্ণ। এই দেশগুলোর অধিকাংশ শেখ বা যুবরাজ রা বিল গেটস, মার্ক জুকারবার্গ এর চেয়েও বেশি জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপন করে থাকে। তা সত্ত্বেও কী কারণে তারা এই তালিকায় স্থান পায় না? 

ফোর্বস, বিজনেস ইনসাইডার, ব্লুমবার্গ এরকম আরো অনেক ম্যাগাজিন এই তালিকা গুলো তৈরি করে থাকে। সেগুলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন হলো ফোর্বস। এবার তাহলে জেনে নেওয়া যাক ফোর্বস এই তালিকা তৈরি করতে পুরো বিশ্ব থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কিভাবে?

অধিকাংশ ব্যবসায়ী ফোর্বস কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রদান করে সহযোগিতা করে থাকেন। কিন্তু যারা কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে চান না তাদের জন্য ফোর্বসের রয়েছে 50 জন প্রতিবেদক এর সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম। তারা প্রথমে একটি সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করেন। তারপর তাদের পরিবারের বিভিন্ন সদস্য, বন্ধুবান্ধব বা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে থাকেন। প্রতিবেদকরা সবসময় সম্ভাব্য তালিকার সদস্যদের নজরে রাখেন। ব্যবসায়ীদের কোন ব্যবসায় চুক্তি, সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় কোনো কিছুই তাদের নজর এড়ায় না। তবে ফোর্বসে প্রকাশিত সব তথ্যই যে সঠিক তা কিন্তু নয়। বিগত বছরগুলোতে ফোর্বসের বিভিন্ন তালিকায় কিছু ত্রুটি লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু তার পরেও ফোর্বস এখনো পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য বিজনেস ম্যাগাজিন। 

এখন প্রশ্ন হলো কি কারনে ফোর্বস মধ্যপ্রাচ্যের শেখদের বা সৌদি যুবরাজ দের কিংবা ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সদস্যদের এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করে না?

প্রথমত ফোর্বস তাদের কেই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে যারা পারিবারিকভাবে প্রাপ্ত সম্পত্তি নয় বরং নিজের প্রচেষ্টায় অন্তত 1 বিলিয়ন ডলার অর্জন করেছেন। এমন অনেক ব্যবসায়ী আছেন যারা নিজের প্রচেষ্টায় ধনী হননি। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির ধনী পরিবার থেকে এসেছেন বলেই বর্তমানে তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা ধনী ব্যক্তি। তাহলে কিভাবে এই হিসাব নিকাশ করা হয় চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ধরুন এক ব্যক্তির কাছে দুই বিলিয়ন ডলার ছিল এবং তিনি ফোর্বসের লিস্টে ছিলেন। বৃদ্ধ বয়সে তিনি তার এই সম্পত্তি দুই সন্তানের মধ্যে এক বিলিয়ন করে ভাগ করে দিলেন। এখন ওরা যে এক বিলিয়ন ডলার করে পেলেন তারা কিন্তু ফোর্বসের তালিকায় আসবেন না। কিন্তু তাদের মধ্যে যদি কেউ এক বিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি করে দশ বিলিয়ন এ পরিণত করতে পারেন তাহলে তিনি তালিকায় আসবেন।

প্রথমত, এজন্যই অধিকাংশ মধ্যপ্রাচ্যের শেখ এবং সৌদি যুবরাজ রা ফোর্বসের তালিকায় আসেন না। কারণ তাদের অধিকাংশ সম্পত্তি পারিবারিকভাবে পাওয়া। দ্বিতীয়ত, শেখ বা ঐ সকল দেশের শাসকদের সত্যিকারের নেট সম্পত্তির পরিমাণ নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব। কারণ তারা নিজেরাও জানেন না তাদের কোথায় কোথায় সম্পত্তি রয়েছে। 2018 সালে একজন মধ্যপ্রাচ্যের শাসক 18 বিলিয়ন সম্পত্তি নিয়ে ফোর্বসের তালিকায় স্থান পান। কিন্তু তালিকা প্রকাশ করার পর তিনি জানান যে এই তথ্য সম্পূর্ন ভুল এবং তার সম্পত্তির পরিমাণ অন্ততপক্ষে এর চেয়ে 10 গুণ বেশি। আর তখন থেকেই ফোর্বস সিদ্ধান্ত নেয় যে মধ্যপ্রাচ্যের কোন শাসকের পরিবারের কেউ এই ফোর্বসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।

এরপর যদি ব্রিটিশ রাজপরিবার গুলোর কথা বলা হয়, সেখানে রানী এবং তার পরিবার যে সম্পত্তি উপভোগ করেন সেগুলো কিন্তু কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। সেগুলো সব ক্রাউনস প্রোপার্টি। অর্থাৎ যার মাথায় মুকুট থাকবে বা যিনি রানী হবেন তিনি এবং তার পরিবার সেগুলো উপভোগ করতে পারবেন। এজন্যই মূলত ব্রিটিশ রাজ পরিবার গুলোকে ফোর্বসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।

তো এই ছিল ফোর্বস সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন