রোলস রয়েস গাড়ির দাম অনেক বেশি কেন? Bengali Gossip 24
রোলস রয়েস সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য (Unknown Facts about Rolls Royce Car)
মানুষ মানুষের প্রেমে পরে এই কথা শুনেছেন কিন্তু কখনো শুনেছেন মানুষ কোন গাড়ির প্রেমে পরে? হাঁ! রোলস রয়েস হচ্ছে সেই গাড়ি যা দেখে আপনি মনের অজান্তেই প্রেমে পড়ে যাবেন। কিন্তু দাম শোনার সাথে সাথেই আপনার প্রেম মুহূর্তেই পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কি এমন আছে রোলস রয়েস গাড়িতে যার জন্য রোলস রয়েস গাড়ির দাম আকাশচুম্বী। রোলস রয়েস পৃথিবীর সবচাইতে বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে একটি। মূলত হাতে তৈরি গাড়ি নির্মাণের জন্যই বিখ্যাত রোলস রয়েস। রোলস রয়েসের গাড়ি গুলো এতো উচ্চ দামের পিছনে কারণটা হচ্ছে এর অসাধারণ কালার। রোলস রয়েস কোম্পানির কাছে প্রায় ৪৫ হাজার শুধু কালারই আছে যা এই গাড়ির পেইন্টিং এ ব্যবহার করা হয়। এমনকি মানুষের পছন্দের লিপস্টিকের কালার থেকে শুরু করে একজন মানুষের কল্পনায় যে রং ই আসুক না কেন সব রঙে আছে রোলস রয়েসের কাছে।আপনার গাড়ির যে রং চান ঠিক সেই রংটায় আপনার জন্য গাড়িতে পেইন্ট করবে রোলস রয়েস।
এমনকি আপনার ব্যবহৃত রঙটা যদি অন্য কারো পছন্দও হয়ে যায় তিনি সেটা নিতে পারবেন না যদি আপনি অনুমতি না দেন। রোলস রয়েসের কাছে গাড়ির পেন্টিং শুধুমাত্র পেন্টিং না এটা ওদের কাছে অনেকটা পূজার মতো। কারণ তাদের কাছে একজন ক্রেতার পছন্দ অনেক মূল্যবান।
যদিও তাদের গাড়িগুলোতে সাত টি স্তরের প্রলেপ দেওয়া হয়, কিন্তু ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী প্রায় 23 স্তরের রঙের প্রলেপ দেয়া হয়ে থাকে রোলস রয়েস গাড়ি গুলিতে। আর এই অতি উন্নতমানের এই পেইন্টিং গুলির এক একটা স্তরে থাকে প্রায় 45 কেজির মত। ভাবতে পারেন রোলস রয়েস কোম্পানি কতো কেজি রঙ ব্যবহার করে হয় একেকটা গাড়িতে। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে এত বিশাল কোম্পানির বানানো গাড়ি গুলোর বিস্তারিত যত পেইন্ট সম্পর্কিত কাজকর্ম আছে সবকিছু একজন মানুষই নিজের হাতে করেন। আর গাড়িগুলোতে এই পেইন্টিং করতে ব্যবহার করা হয় কাঠবিড়ালি লোমবিশিষ্ট ব্রাশ। কারণ এই দিয়ে কোন পেইন্ট করার পর সেখানে কোনো আলাদা দাগ পড়ে না।
রোলস রয়েসের বাইরের অংশগুলোতে এমন এমন কিছু বিশেষত্ব আছে যা হাতে তৈরি কিন্তু একদম নিখুঁত। রোলস রয়েসের সামনে যে গ্রিল আছে সেটা সম্পূর্ন হাতের তৈরি আর চাকার কেন্দ্রে যে লোগো আছে যেটা চাকা ঘুরলেও সম্পূর্ন স্থির থাকে তা সত্যিই অসাধারণ আর রোলস রয়েসের যে জিনিসটা সবচাইতে ব্যতিক্রম এবং আভিজাত্যের প্রতীক সেটা হলো স্পিরিট অফ এক্সটারসি। যেটা গাড়ি চালানোর জন্য ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে। 2013 সালে বিখ্যাত বিএমডব্লিউ কোম্পানি শুধুমাত্র রোলস রয়েসের এই স্পিরিট অফ এক্সটারসি এবং নাম কিনে নেওয়ার জন্য 65 মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছিল।
গাড়ির বাইরের চাইতে ভিতরের খরচ অনেক বেশি কারণ বিলাসিতার এক অনন্য রূপ এর ভিতরের ডিজাইন। গাড়ির ভিতরে যেন সামান্যও বাইরের শব্দ না আসে সেজন্য রোলস রয়েসের গাড়িগুলোতে প্রায় 300 পাউন্ড এর বেশি সাউন্ড প্রফ ফোম ব্যবহার করা হয়। গাড়ির চাকা নির্মাণ করে কন্টিনেন্টাল নামক কোম্পানি। এই কোম্পানি চাকার মধ্যে একধরনের ফোম ব্যবহার করে যাতে রাস্তার চাকার শব্দ কমিয়ে আনে।
এই গাড়ির ড্যাশবোর্ড বলতে গেলে ছোট খাটো একটা আর্ট গ্যালারি। যা কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজ করা হয়। রোলস রয়েসের আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে এই গাড়ির ছাদ। রোলস রয়েস গাড়ির ছাদে ব্যবহার করা হয় স্টার লাইন হেড লাইনার। যার সাহায্যে এই গাড়ির ছাদকে রাতের আকাশের মত করে ফেলা যায়। আর এই ধরনের স্টার লাইন নির্মাণ করা হয় সম্পূর্ণ হাতের সাহায্যে করতে প্রায় 16 ঘন্টা সময় লাগে।
গত 10 বছরে বেড়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী। এর পেছনে রয়েছে অসাধারণ ডিজাইন, বিলাসিতা আর শতভাগ কাস্টমার সটিস্ফাকশন। রোলস রয়েসের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি গাড়ি হলো স্বফট 10। এই গাড়িটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছিল সবমিলিয়ে চার বছর। যার মূল্য ধরা হয়েছিল 13 মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর কিছুদিন আগেও এই গাড়িটি ছিল পৃথিবীর সবচাইতে দামি গাড়ি। যেখানে অন্য কোম্পানির গাড়ি গুলো হয়তো গতি বা উত্তম চালনোর জন্য দামি সেখানে রোলস রয়েস শুধু একটা কারণেই এত দামী আর সেটা হচ্ছে বিলাসিতা।
তো এই ছিল রোলস রয়েস সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন