আইপিএল দল গুলি কিভাবে আয় করে? Bengali Gossip 24
আইপিএল দল গুলি কিভাবে আয় করে? (How Do IPL teams earn money)
নিলামের সময় আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলি ভালো খেলোয়াড় কেনার জন্য অনেক বড়ো অঙ্কের টাকা নিয়ে বসে। পছন্দের খেলোয়াড় কেনার জন্য চলে টাকা লড়াই। কোন কোন ক্রিকেটারের পেছনে তারা ব্যয় করেন 15 থেকে 20 কোটি টাকা। এত বিপুল অর্থ ব্যয় দেখে আমাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন আসতে পারে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা এত অর্থ ব্যয় করছে এতে তাদের লাভ হয় কিভাবে? কিংবা এতো অর্থ ব্যয় করে কতটুকু ই লাভ করতে পারে? এখানে মনে রাখতে হবে আইপিএলে যারা দল কিনেছে তারা কিন্তু শুধুমাত্র ক্রিকেটকে ভালোবেসে দল কিনেন নি। আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজির যারা মালিক তারা প্রত্যেকেই বড় বড় ব্যবসায়ী। তাদের কাছে ক্রিকেটের চেয়ে টাকায় মূল লক্ষ্য।
এই কারণে আইপিএলের অনেক দল মাঠে বাজে পারফরম্যান্স করলেও মালিকদের হতাশ হতে দেখা যায় না। তাহলে মাঠের ক্রিকেট যদি মুখ্য না হয় তাহলে ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকরা কিভাবে লাভ করেন? তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক।
মিডিয়া সত্ত্ব- আইপিএলের সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে মিডিয়া রাইট থেকে পাওয়া অর্থ। মিডিয়া রাইট বলতে আইপিএলের ম্যাচ গুলো টেলিভিশন এবং অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্ম এ যারা প্রচার করে তাদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ কে বোঝায়। প্রাথমিকভাবে বিসিসিআই এই অর্থ গ্রহণ করে। পরবর্তীতে নিদ্দিষ্ট হারে এই অর্থ ভাগ করে দেয়া হয়। তবে যে দল যতদূর পর্যন্ত যাবে তাদের টাকার পরিমাণ তত বেশি হবে। অর্থাৎ যে দলগুলো সেমি ফাইনাল, ফাইনাল খেলবে সেই দল গুলি অবশ্যই নরমাল রাউন্ড থেকে বাদ পড়া দলগুলোর চেয়ে বেশি অর্থ পাবে। মিডিয়া রাইট থেকে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো 60 থেকে 70 শতাংশ আয় করে থাকে।
ব্র্যান্ড স্পনসরশিপ- আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো আয়ের আরেকটি প্রধান উৎস হচ্ছে ব্র্যান্ড স্পনসরশিপ। প্রত্যেক দলই কোনো না কোনো কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকে। সেই কোম্পানির লোগো বা নাম জার্সিতে প্রদর্শনের মাধ্যমে দলগুলো অর্থ আয় করে থাকে। স্পন্সর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে যে যত স্পষ্ট ভাবে নিজেদের নাম প্রচার করতে চায় তাদের যত বেশি অর্থ দিতে হয়। বিশেষ করে ম্যাচের জার্সিতে সামনে এবং পেছনে খেলোয়ারদের নামের নিচে যে কোম্পানির লোগো থাকে তাদের বেশি অর্থ দিতে হয়। আর হাতে বা অন্য কোথাও ছোট করে কোন কোম্পানির লোগো বানাতে চাইলে তুলনামূলক কম অর্থ দিতে হয়।
টিকিট বিক্রি- আইপিএল দলের প্রায় 10 শতাংশ আসে টিকিট বিক্রি করে। আইপিএলের টিকিট বিক্রিতে অর্থের বড় অংশ চলে যায় স্বাগতিক দলের কাছে। অর্থাৎ যে দলের মাঠে খেলা হচ্ছে সেই দল সিংহভাগ অর্থ পাবে। সেটা প্রায় 80 শতাংশের কাছাকাছি। আইপিএলের ম্যাচ টিকিট এর দামও ফ্রাঞ্চাজি গুলো নির্ধারণ করে থাক। তবে এক্ষেত্রে যেখানে খেলা হবে, মাঠের দর্শক ধারন ক্ষমতা, দলের জনপ্রিয়তা এবং সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মানকে বিবেচনা করে টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয়। টিকিটের দাম যেন দর্শকদের ক্ষমতার বাইরে চলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়।
প্রাইজ মানি- প্রাইজ মানি থেকেও আইপিএলের দল গুলি মোটা টাকা আয় করে থাকে। 2019 সালে চ্যাম্পিয়ন দলকে 20 কোটি টাকা অর্থ প্রদান করা হয়েছিল তার রানার আপকে 12.5 কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। প্রাইজমানি মূলত দুই ভাগে ভাগ করা থাকে একটা অংশ পাই খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফ আরেকটা অংশ পায় ফ্রেঞ্চাইজি । গতবছর করোনার কারণে আইপিএল এর প্রাইজ মানি অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছিল। 2020 মৌসুমে যারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তাদের 10 কোটি টাকা এবং রানার আপ দলকে 6.25 কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিলো।
জার্সি বিক্রি- আইপিএল দলগুলির আরেকটি আয়ের প্রধান উৎস হল জার্সি বিক্রি। আইপিএলে বিভিন্ন দল তাদের নিজেদের জার্সি, কেপ, লোগো ইত্যাদি বিক্রি করে ভালই টাকা উপার্জন করে।
এছাড়াও বিসিসিআইয়ের কাছ থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো মিডিয়া রাইট ছাড়াও আইপিএলের অফিশিয়াল স্পনসর এবং পার্টনারশিপের অর্থ আয় করে থাকে।
তো এই ছিল আইপিএলের বিভিন্ন দল গুলির আয়ের প্রধান উৎস।
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন