স্ট্যাচু অব লিবার্টির ইতিহাস | Statue of Liberty | Bengali Gossip 24
স্ট্যাচু অব লিবার্টির ইতিহাস (Unknown Facts about Statue of Liberty)
![]() |
Statue of Liberty |
প্রায় দেড়শ বছর ধরে আমেরিকার সাম্য আর মুক্তির প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি। আমেরিকার স্বাধীনতার 100 বছর উপলক্ষে ফ্রান্সের জনগণের পক্ষ থেকে ভাস্কর্যটি আমেরিকার জনগণকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। তো চলুন জেনে নিই স্ট্যাচু অব লিবার্টি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।
রোমান দেবীর অবয়ব সবুজ রঙের চাদরে আবৃত এক নারীর স্ট্যাচু এই স্ট্যাচু অব লিবার্টি ভাস্কর্যটির বাইরের নকশা করেন ফরাসি স্থাপত্যিক ফ্রেডরিক বার্থোল্ডি এবং এর ভিতরের নকশা করেন আরেক বিখ্যাত ফরাসি স্থাপত্যিক গুস্তাভ আইফেল। তিনি আইফেল টাওয়ারের নকশার জন্য বিখ্যাত।
অতীতে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে আমেরিকাকে সাহায্য করেছিল ফ্রান্স। আমেরিকার স্বাধীনতা অর্জনের 100 বছর পূর্তিতে দুই দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে 1886 সালে ফ্রান্স ভাস্কর্যটি আমেরিকাকে উপহার দেয়। আমেরিকার নিউইয়র্কে লিবার্টি দ্বীপে স্ট্যাচু অব লিবার্টি কে স্থাপন করা হয়। কারণ তৎকালীন সময়ে বহু ইউরোপীয় আদিবাসী নিউইয়র্ক বন্দরের মাধ্যমে আমেরিকার প্রবেশ করেছিল। এই ভাস্কর্যটি সেইসব অধিবাসীদেরকে আমেরিকায় স্বাগত জানাতো। বর্তমানে প্রতিবছর প্রায় 35 লক্ষ লোক স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখতে আসে।
1924 সাল পর্যন্ত ভাস্কর্যটির নাম ছিল লিবার্টি এনলাইটেনিং দ্য ওয়ার্ড। পরবর্তীতে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় স্ট্যাচু অব লিবার্টি। ভাস্কর্যটির ডান হাতে রয়েছে জ্বলন্ত মশাল এবং বাম হাতে রয়েছে আইনের বই।
স্ট্যাচু অব লিবার্টির মুকুটের মধ্যে রয়েছে সাতটি কাটা। যা সাত মহাদেশ এবং সাত সমুদ্রকে নির্দেশ করে। স্ট্যাচু অব লিবার্টির মূল ভাস্কর্যটির উচ্চতা 151 ফুট 1 ইঞ্চি। তবে মাটি থেকে এর উচ্চতা 5 ফুট 1 ইঞ্চি।
এর পায়ের কাছে পড়ে থাকা শেকল আমেরিকার মুক্তির প্রতীক। তামার তৈরি সমগ্র মূর্তিটির ওজন প্রায় আড়াই লক্ষ কেজি। স্ট্যাচু অব লিবার্টির ভেতরে 354 টি সিঁড়ির ধাপ অতিক্রম করে মূর্তির মাথায় ওঠা যায়। মূর্তির মুকুটের কাছে রয়েছে 25 টি জানালা। যা ওয়াচ টাওয়ার হিসেবে কাজ করে।
স্ট্যাচু অব লিবার্টি সম্পূর্ণ মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে ফ্রান্সে। লোহার ফ্রেমের ওপর তামার পাত দিয়ে 300 টি খন্ডে তৈরি হয়েছে মূর্তিটি। 1885 সালের 214 বক্সে করে জাহাজে করে ভাস্কর্যটি আমেরিকায় পাঠানো হয়।
1886 সালের 28 অক্টোবর তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ভাস্কর্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্ট্যাচু অব লিবার্টি প্রথম থেকেই দেখতে সবুজ রঙ-এর ছিল না। এমনকি একে সবুজ রং করা হয়নি। মূর্তিটি তামার তৈরি হওয়ায় এর রঙ ছিল তামাটে। দীর্ঘকাল ধরে এর চারদিকে থাকা সমুদ্রের জলীয়বাষ্পের সাথে তামার বিক্রিয়ায় মূর্তিটি সবুজ রঙ ধারন করেছে। এটি এক ধরণের মরিচা।
শুরু থেকেই স্ট্যাচু অব লিবার্টি কে নিউইয়র্কের হাডসন নদীর পাড়ে বসানোর পরিকল্পনা ছিলনা। ভাস্কর্যটির স্থপতি ফ্রেডরিক বার্থোল্ডি মূর্তিটির নকশা করেছিলেন মিশরের সুয়েজ খালের পাড়ে স্থাপনের জন্য কিন্তু বিভিন্ন কারণে মিশর এই ভাস্কর্য নির্মাণের অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরবর্তীতে নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে ভাস্কর্যটি আমেরিকা স্থাপন করা হয়।
সুয়েজ খালের পারে মূর্তি স্থাপনের আগে এর নামকরণ করা হয়েছিল ইজিপ্ট ব্রিঙ্গিং লাইট টু এশিয়া।
তো এই ছিলো সাম্য এবং মুক্তির প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা স্ট্যাচু অব লিবার্টি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন