Knowledge is Power 😎

কাতার (Qatar) সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য

২টি মন্তব্য

Interesting facts about Qatar  in Bangali


কাতার সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য

আজ আমরা এমন একটি দেশের সম্পর্কে মজাদার তথ্য জানবো যেই দেশটিকে সারা বিশ্ববাসী কোটিপতির দেশ হিসাবে চিনে।  সেই দেশের মানুষের জীবনযাত্রা এবং বিলাসিতা সারা বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করেছে।  আর সেই দেশটির নাম হলো কাতার। কাতার মধ্য প্রাচ্যের একটি আরব দেশ। মধ্য প্রাচ্যের সমস্ত আরব দেশ গুলির মধ্যে কাতারই সবচেয়ে ছোট দেশ।  তো জেনে নেওয়া যাক কাতার সম্পর্কে কিছু  অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য। 

১৯৭১ সালের আগে কাতার ইউনাইটেড কিংডমের অংশ ছিল। ১৯৭১ সালে ব্রিটিশ স্বাশন থেকে কাতার স্বাধীনতা অর্জন করে। তারপর থেকেই খুব তাড়াতাড়ি শক্তিশালী দেশে পরিণত হয়েছে। কাতারের রাজধানী এবং সবচেয়ে বড়ো শহর হলো দোহা।  এই দোহাতে একটি কৃতিম আইল্যান্ড বানানো হয়েছে যার নাম ফার্ম কাতার।  কাতারের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা এই দোহাতেই বসবাস করে। কাতারের দক্ষিণে সৌদি আরব এবং পশ্চিমে বাহারা অবস্থিত। 

কাতার খুব ধনী দেশ  হওয়ায় সিঙ্গাপুরের পর কাতারে সবচেয়ে বেশি কোটিপতি লোক বসবাস করে। আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে সেখানে প্রায় ১৩ শতাংশ লোক কোটিপতি। আপনি কাতারে বেকার লোক খুঁজেই পাবেন না। কারণ সেখানকার সমস্ত মানুষ কোনো না কোনো কাজের সাথে যুক্ত থাকে। সেখানে বেকারত্বের সংখ্যা ১ শতাংশের থেকেও খুবই কম। কাতারে প্রতি বেক্তির আয় ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৩০ মার্কিন ডলার। 

২০১৭ সাল পর্যন্ত কাতারের মোট জনসংখ্যা ২৬ লক্ষ ৪১ হাজার ৬৬৯ জন। আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে কাতারের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ কাতারের বাসিন্দা। আর বাকি ৮৬ শতাংশ লোকই বিদেশী। তারা বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য সেখানে বসবাস করে। পৃথিবীর মধ্যে কাতারই এক মাত্র দেশ যেখানে প্রায় ১৫০ দেশের বেশি লোক বসবাস করে। 

কাতারের রাষ্ট্রীয় ভাষা আরবি। কিন্তু সেখানে ইংরেজি ভাষাও কিছুটা প্রচলিত আছে।  সেখানে সবচেয়ে বেশি মুসলিম ধর্মের লোক বসবাস করে।  এছাড়াও সেখানে কিছু খ্রিস্টান এবং হিন্দু ধর্মের লোকও বসবাস করে। কাতার ইসলামিক রাষ্ট্র হওয়ায় সেখানে শুক্রবার এবং শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়া হয়। 

সেখানকার কোনো মানুষের থেকে সরকার কোনো ট্যাক্স নেয় না। তাছাড়া সেখানে বিদ্যুৎ পরিষেবা, চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।  কাতারে কোনো গরিব লোক বসবাস করে না। অপেক্ষাকৃত যারা কিছুটা নিম্ন মানের আয় করে তারাও খুব সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করতে পারে। 



কাতারে শিক্ষিতের হার প্রায় ৫৮ শতাংশ। কাতারে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা খুবই কম। সেখানে মোট জনসংখ্যার মাত্র ২০ শতাংশ মেয়ে বসবাস করে। কিন্তু মেয়েদের সেই রকম কোনো স্বাধীনতা দেওয়া না। 

কাতার একটি ইসলামিক রাষ্ট্র হওয়ায় সেখানে কিছু নিয়ম রয়েছে যা সবাইকে মেনে চলতে হয়। যেমন সেখানে মেয়েদের ছোট ছোট পোশাক পড়া একদমই নিষেধ। তাছাড়া আপনি পাবলিক প্লেসে কখনো মদ্যপান করতে পারবেন না। সেখানে মদ কেনাবেঁচাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। সেখানে পর্নোগ্রাফিও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কাতারে দুই ধরণের আইন দেখতে পাওয়া যায়। একটা হলো সাধারণ আইন এবং আরেকটি হলো শরিয়া আইন। শরিয়া আইন খুবই কঠিন। সেখানে যদি কেউ বাজে ধর্মীয় মতবাদ করে  তাহলে তাকে  সাত বছরের জন্য জেলে থাকতে হতে পারে। 

একটা সময় কাতার আরব দেশ গুলির সবচেয়ে গরিব দেশ ছিল।  কিন্তু বর্তমানে কাতার পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ । তারা  প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল খনন এবং মুক্তা নিষ্কাশন থেকে আয় করে। 
কাতারের শুষ্ক জমি এবং প্রতিকূল অবস্থার জন্য সেখানে কৃষিকাজ খুবই কম পরিমানে হয়। আর সেখানে প্রচুর পরিমান খাবার বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। সেখানে প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যায় মধু খাওয়ার রীতি রয়েছে। সেখানকার লোকজনের প্রিয় খাবার হলো মধু এবং খেজুর। 

কাতার তৈল খনির দেশ হওয়ায় সেখানে পেট্রোল জলের দরে পাওয়া যায়। হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট কাতারের বিখ্যাত বিমান বন্দর। এই এয়ারপোর্টটি ২০১৪ সালে নির্মিত করা হয়েছে। প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ এই বিমান বন্দর দিয়ে  যাতায়াত করে। 

তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, প্রাচ্য নিদর্শন এবং  কোটিপতি লোকদের জীবনযাপন দেখার জন্য সেখানে প্রতি বছর অনেক পর্যটক কাতারে দেয়। 

সবশেষে, কাতার পৃথিবীর প্রথম সবচেয়ে ছোট দেশ যে ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে। হাঁ! ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ কাতারে অনুষ্টিত হতে চলেছে।  কাতারের সবচেয়ে প্রিয় খেলা হলো ফুটবল। যেই কারণে কাতারের সাথে ফুটবলের সম্পর্ক অন্যরকম। 

২টি মন্তব্য :